Thank you for trying Sticky AMP!!

বাজেটে একই বৃত্তে ঘুরছে শিক্ষার বরাদ্দের হার

সাত বছর আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে জাতীয় বাজেট ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকার। সেখানে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ১১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তাতে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমে হয় ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আটটি অর্থবছরের মধ্যে এক বছর বাদে সব সময়ই শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। আবার যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার অধিকাংশই চলে যায় বেতন–ভাতা ও অবকাঠামো খাতে। কেবল ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। মোট বাজেটে অর্থ বাড়ায় শিক্ষা খাতে অর্থ বরাদ্দও বেড়েছে। কিন্তু বরাদ্দের হার সেভাবে বাড়েনি। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দিক থেকেও ভালো অবস্থানে নেই শিক্ষা খাতের বাজেট। কয়েক বছর ধরে জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশের কাছাকাছি থাকছে শিক্ষার বরাদ্দ।

দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষা খাতের বরাদ্দের হার বাড়ানোর দাবি থাকলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না। ফলে গুণগত শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ইউনেসকোর চাওয়া হলো, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ হবে জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ২০ শতাংশ এবং জিডিপির ৬ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে দূরে অবস্থা করছে।

>

শিক্ষায় বরাদ্দের হার বাজেটের ১০–১২ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে
ইউনেসকোর চাওয়া, শিক্ষায় বরাদ্দ কমপক্ষে ২০ শতাংশ হোক
বাংলাদেশ এখনো সেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে দূরে অবস্থা করছে

ইউনেসকোর সবার জন্য শিক্ষা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গঠিত নয়টি দেশের ফোরাম ই-৯। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ই-৯ ভুক্ত দেশসহ ১৪টি দেশের শিক্ষা খাতের বরাদ্দের তথ্য তুলে ধরেছে। সেটি তুলনা করে দেখা গেছে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দের হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পেছনের দিকে। যেমন নেপালে শিক্ষা খাতে ২০১৭ সালে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের প্রায় ১৬ শতাংশ। একই বছর শ্রীলঙ্কায় তা ছিল প্রায় ১৫ শতাংশ। আবার ইরানে ২০ শতাংশের বেশি। এমনকি আফগানিস্তানে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর ইন্দোনেশিয়ায় ২০১৫ সালেই শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ভারতে ২০১৩ সালে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ১৪ শতাংশের বেশি।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, পর্যায়ক্রমে বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ জিডিপির ৪ শতাংশ করার পরিকল্পনা করেছে সরকার।

শিক্ষা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে সংখ্যার দিক দিয়ে শিক্ষার অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু গুণমান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে। শিক্ষার গুণমান বাড়াতে হলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে কাজ করতে হবে। তাদের আশা আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের হার বাড়বে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, ইউনেসকোর নির্দেশিকা অনুযায়ী শিক্ষা খাতে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। আর এটা কবে নাগাদ করা হবে, সেটার রূপরেখা করে এগোতে হবে। তবে শিক্ষার সঙ্গে বাজারের চাহিদার সংযোগ সৃষ্টি করতে হবে। না হয় বেকারত্ব বাড়বেই। এ জন্য দক্ষতাভিত্তিক (কারিগরি ও ভোকেশনাল) শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গুণগত শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে।