Thank you for trying Sticky AMP!!

বাবার সঙ্গে আর কথা হবে না সুফকার

মেয়ে সুফকা সুলতানার সঙ্গে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক সুমন আলী। ছবি: প্রথম আলো

বাবাকে দেখার অপেক্ষায় ছটফট করছিল সুফকা সুলতানা। মাকে বাবার কাছে ফোন করার জন্য অসংখ্যবার জিদ করেছে। মা রাবেয়া সুলতানা মেয়ের আকুতি মেটাতে পারেননি। সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলেছেন, তার বাবা সরকারি কাজে ঢাকায় গেছেন, খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসবেন। সেই বাবা আজ শুক্রবার বাড়িতে ফিরছেন, তবে লাশ হয়ে। আর কোনো দিনই স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারবেন না। ছয় দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন আলী (৩৮) মারা গেছেন। ঢাকায় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুরের আবদুল লতিফের ছেলে।

পুলিশ কর্মকর্তা সুমন আলীর স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা জানান, ঈদুল আজহার কয়েক দিন আগে সুমনের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। নাটোরে তাঁর নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। ফলাফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। তাই ঈদের পরদিন তাঁকে ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। এরপর আরও খারাপ হতে থাকে। ৮ আগস্ট তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছয় দিন থাকার পর গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

রাবেয়া সুলতানা আরও জানান, সুমনকে ঢাকায় নেওয়ার পর থেকে মেয়ে সুফকা সুলতানা (৫) বাবাকে দেখার জন্য অস্থির হয়েছে। ফোনে কথা বলতে চেয়েছে। কিন্তু আইসিইউতে থাকায় ফোনেও কথা বলতে পারেনি। নানা কথা বলে তাকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে। বাবার মৃত্যুর খবর তাকে জানানো হয়নি।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘এ পর্যন্ত বড়াইগ্রাম থানার ১৩ জন পুলিশ সদস্য কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজন সুস্থ হয়েছেন। পাঁচজন আইসোলেশনে আছেন। এই প্রথম নাটোর জেলায় কর্মরত একজন পুলিশ কর্মকর্তা কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। তিনি আরও বলেন, ‘সুমন আলী একজন চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। ঈদের আগে গরুভর্তি একটি ট্রাক লুটের মামলা তদন্ত করতে তিনি নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়েছিলেন। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শ্বাসকষ্ট থাকায় তাঁকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু আমরা তাঁকে সুস্থ করতে ব্যর্থ হয়েছি।’