Thank you for trying Sticky AMP!!

বালুর মাঠে 'সবুজ বলয়'

বাসাবো বালুর মাঠে প্রস্তাবিত ভাসমান স্বাধীনতা মঞ্চের নকশা।

সবুজে সমৃদ্ধ হবে বাসাবো বালুর মাঠ। মাঠের পশ্চিম পাশের পুকুরে নির্মাণ করা হবে স্বাধীনতা মঞ্চ। মূল মাঠে থাকবে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যবস্থা। পুরো মাঠ ঘিরে থাকবে হাঁটার পথ। শিশুদের বিনোদনের জন্য করা হবে শিশুপার্ক।

জানা গেছে, পঞ্চাশের দশকে ওই জায়গা অধিগ্রহণ করে রেল কর্তৃপক্ষ। এখান থেকে মাটি কেটে কমলাপুর রেলস্টেশনের জায়গা ভরাট করা হয়। এতে জায়গাটি বড় পুকুরে পরিণত হয়। ২০০৪ সাল পর্যন্ত এটি ছিল পরিত্যক্ত ডোবা। স্থানীয় সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরীর চেষ্টায় মাঠের দক্ষিণ পাশে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বালুর মাঠ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সে অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়ার পরই মাঠের সংস্কারকাজ শুরু হবে।

মাঠের মালিক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মাঠটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এখনো সংস্কারকাজের জন্য বরাদ্দ দেয়নি মন্ত্রণালয়। তাই আপাতত ব্যক্তি উদ্যোগে সংস্কারকাজ শুরু করতে চান সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী। এ জন্য ইতিমধ্যে তিনি কাজ শুরুর জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চেয়েছেন। অনুমতি পাওয়ার পরই সংস্কারকাজ শুরু হবে।

সাবের হোসেন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন, সংস্কারকাজের জন্য একটি নকশা তৈরি করা হয়েছে। নকশা অনুযায়ী, মাঠের পশ্চিম পাশের পুকুরে স্বাধীনতা মঞ্চ নির্মাণ করা হবে। সেখানে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক থাকবে। এলাকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মঞ্চটি ব্যবহার করতে পারবে। মূল মাঠে বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যবস্থা থাকবে। পোশাক পরিবর্তনের জন্য ভবন নির্মাণ করা হবে। ক্রিকেট অনুশীলনের মাঠ থাকবে। মাঠের একপাশে কমিউনিটি সেন্টার করা হবে। মাঠটিকে সবুজে সমৃদ্ধ করার জন্য নানা ধরনের গাছ লাগানো হবে। এ জন্য এই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সবুজ বলয়’।

মাঠটির আয়তন ছিল ১১ একর। এর মধ্যে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দুই বিঘা জায়গা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মাঠের পাশে বাসাবো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে প্রায় এক একর জমি, যা ডায়াবেটিস হাসপাতালের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া অনেকে অবৈধভাবে মাঠের জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।

আলোকিত সবুজবাগ সংগঠনের সভাপতি ও সবুজবাগ থানার ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. মনির হোসেন মাঠের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদ করে জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী করার দাবি জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করতে দখলদারদের সময় বেঁধে দেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অপসারণ করা না হলে তা ভেঙে দেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাবের হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাঠটিতে সবুজ বলয়ে রূপান্তর করব, এটা আমার প্রতিশ্রুতি ছিল। এলাকাবাসীর চাহিদার আলোকে কীভাবে এই মাঠটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়, সেটাই এখন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ জন্য বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা চলছে। মাঠের খসড়া নকশা তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রুত এর সংস্কারকাজ শুরু হবে।’

গতকাল সোমবার দেখা যায়, এক সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মাঠটির উত্তর পাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। স্কুলপড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে খেলাধুলা করছে। মাঠের পশ্চিম পাশে গণপূর্ত বিভাগের একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো। সেখানে লেখা, ‘এতদ্দ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে গণপূর্ত অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ-১, সবুজ বলয় প্রকল্পের আওতাধীন বাসাবো বালুর মাঠ এলাকার সংস্কার ও উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক স্বাধীনতা মঞ্চ নির্মাণের লক্ষ্যে পুকুরটির খননকাজ করা হয়েছে। সরকারি এ পুকুরে প্রবেশ/সাঁতার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও বিপজ্জনক। এ বিষয়ে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।’