Thank you for trying Sticky AMP!!

বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই চার লেন হচ্ছে সড়ক

সড়কের ওপর এখনো থেকে গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। এর মধ্যেই চলছে বেগমগঞ্জ-সোনাপুর চার লেনের কাজ। সম্প্রতি একলাশপুরে। প্রথম আলো

সড়ক চার লেন হচ্ছে। আনুষঙ্গিক কাজ সেরে চলছে পিচঢালাইও। কিছু অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে গাড়ি চলাচলের জন্য। কিন্তু সড়কের বর্ধিত অংশে এখনো ঠাঁই দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের খুঁটি। এসব খুঁটি না সরিয়ে সড়ক চার লেন হলে সুফল মিলবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। রয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। এই চিত্র নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ-সোনাপুর সড়কের। চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)।

সওজ কর্তৃপক্ষের দাবি, খুঁটি সরানোর জন্য প্রায় সাত কোটি টাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিউবো) পরিশোধ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ভূমির উন্নয়নসহ কারিগরি কিছু সমস্যার কারণে খুঁটি সরাতে দেরি হচ্ছে। ১৩ কিলোমিটার এই সড়কে খুঁটি রয়েছে ২৫০টি।

সম্প্রতি সরেজমিনে সড়কের বেগমগঞ্জের চৌমুহনী চৌরাস্তা থেকে নোয়াখালী শহরের মাইজদী বাজার এলাকা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়কের চার লেনের সম্প্রসারিত অংশের বেশির ভাগেই এখনো বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়ে গেছে। শুধু একলাশপুর এলাকায় কিছু খুঁটি সরানো হয়েছে। কিছু অংশে খুঁটি রেখেই পিচঢালাই করছে ঠিকাদারের লোকজন। আবার কোথায়ও পিচঢালাইয়ের জন্য সড়ক প্রস্তুত করা হচ্ছে। খুঁটিসহ যেসব অংশ পিচঢালাই করা হয়েছে, তা খুলে দেওয়া হয়েছে গাড়ি চলাচলের জন্য। খুঁটি এড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে গাড়ি।

সড়কের একলাশপুর এলাকায় কথা হয় অটোরিকশাচালক আবদুর রহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, সড়ক পিচঢালাই করায় পাল্লা দিয়ে চলছে যানবাহন। খুঁটি থেকে যাওয়ায় রাতে গাড়ি চালাতে গিয়ে কষ্ট হয়। একই কথা বলেন, পিকআপ ভ্যানের চালক মো. মিলন। তিনি যোগ করেন, খুঁটি না সরিয়ে সড়কের বর্ধিত অংশ খুলে দেওয়াই ঠিক হয়নি।

 সওজের নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, সড়কের ওপর থেকে খুঁটি সরিয়ে নতুন লেন নির্মাণের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় সাত কোটি টাকা। নিয়ম অনুযায়ী সড়কের কাজ শুরুর আগেই বিউবো তাদের খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়ার কথা। কিন্তু বেশির ভাগই সরানো হয়নি। এতে কিছু কিছু জায়গা খুঁটি রেখেই সড়কের উন্নয়নকাজ এগিয়ে নিতে হচ্ছে। 

বিউবোর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস ইবনে আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর আগে সড়কের ভূমির উন্নয়ন, অধিগ্রহণসহ নানা বিষয় থাকে। এ কারণে চাইলে খুঁটি সরিয়ে নেওয়া যায় না। তা ছাড়া জেলা শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহের দুটি ৩৩ কেভি লাইন ওই সড়ক দিয়ে নেওয়া হয়েছে। শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ রেখে খুঁটি সরানো যায় না। তবে সড়কের ওপর থাকা ২৫০টি খুঁটির মধ্যে ৫৭টি ইতিমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোও সরানো হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, বেগমগঞ্জের চৌমুহনী চৌরাস্তা থেকে দক্ষিণ দিকে সোনাপুর পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এ সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬২ কোটি টাকা। 

প্রকল্পের বেশির ভাগ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণে। কার্যাদেশ অনুযায়ী চৌমুহনী চৌরাস্তা থেকে জেলা শহর মাইজদীর পৌর বাজার পর্যন্ত সড়কটি ৮৬ ফুট প্রশস্ত করা হবে। আর পৌর বাজার থেকে সোনাপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত করা হবে ৬৬ ফুট। চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, খুঁটি না সরানো এবং ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ না হওয়াসহ নানা কারণে প্রকল্পটির মেয়াদ ইতিমধ্যে এক বছর বাড়ানো হয়েছে। আড়াই বছর মেয়াদের প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল জুন ২০২০ সালে। পরে তা বাড়িয়ে এখন করা হয়েছে জুন ২০২১ সাল পর্যন্ত।