Thank you for trying Sticky AMP!!

বিদ্যুৎখাতের পাচার হওয়া টাকা দিয়ে ২২টি পদ্মা সেতু হতো, বিদ্যুতের গণশুনানিতে আলালের অভিযোগ

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল অভিযোগ করেছেন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সাশ্রয়ী উৎপাদনকারী বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রেখে সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের কেন্দ্র থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনছে। এতে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এভাবে অর্জিত টাকা আবার বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর হিসেবে এ সরকারের আমলে প্রায় ৯ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। যা দিয়ে ২২টি পদ্মাসেতু তৈরি করা যেত।

আজ রোববার সকালে পিডিবির খুচরা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানিতে মোয়াজ্জেম হোসেন এ অভিযোগ করেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম বেশি। অথচ সরকারি কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম কম। কিন্তু পিডিবি সাশ্রয়ী উৎপাদনকারী বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রেখে সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনছে। এতে বিদ্যুতের ব্যয় বাড়ছে। বাড়তি ব্যয় মেটাতে গিয়ে এই সরকারের আমলে আটবার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ডুবে যাওয়া ফারমার্স ব্যাংক এখন পদ্মা ব্যাংক। ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস শরাফতকে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আনলিমা টেক্সটাইলও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে।

দুর্নীতির কারণেই বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, প্রিপেইড মিটারের জন্য একাধিক খাতে অর্থ নিচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো। এর মধ্যে রয়েছে অন্যতম মিটার ভাড়া। তাই সারা দেশে প্রিপেইড মিটারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে। এই মিটার ভাড়া কত দিন পর্যন্ত নেওয়া হবে তিনি পিডিবির কাছে তা জানতে চান।

এর জবাবে পিডিবির জেনারেল ম্যানেজার কাউসার আমীর আলী বলেন, এই মিটার ভাড়া সারা জীবনই দিতে হবে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি। এই শুনানি আগামী মঙ্গলবার শেষ হবে। প্রথম দিন পিডিবির পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ও সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) সঞ্চালন মাশুলের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর শুনানি হয়। পিডিবি পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য ইউনিট প্রতি ১ টাকা ১১ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।

অবশ্য খুচরা বিদ্যুতের বেলায় পিডিবি সুনির্দিষ্ট কোনো মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করেনি। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, যদি পাইকারি বিদ্যুতের মূল্য বাড়ে তাহলে খুচরা পর্যায়েও বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করতে হবে।

পিডিবি গণশুনানিতে জানায়, সংস্থাটি ২০১৮-১৯ অর্থ-বছরে ইউনিট প্রতি বিতরণ ব্যয় ছিল ১ টাকা ৯ পয়সা। যদি পাইকারি পর্যায় বিদ্যুতের দাম না বাড়ে তাহলে এটি ১ টাকা ৫ পয়সায় আসবে। এতে করে তাদের মুনাফা কিছুটা বাড়বে। দাম বাড়ানোর দরকার হবে না।
পাইকারি বিদ্যুতের পাশাপাশি পিডিবি খুচরা পর্যায়ও বিদ্যুৎ বিতরণ করে থাকে। এখন শুরু হয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) শুনানি।

কাল সোমবার সকালে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) এবং দুপুরে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) এবং দুপুরে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) গ্রাহক পর্যায়ের দাম পরিবর্তনের ওপর গণশুনানি রয়েছে।

বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম কমিশনের অপর তিন সদস্য রহমান মুর্শেদ মিজানুর রহমান, মাহমুদউল হক ভূঁইয়া শুনানি গ্রহণ করছেন। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।