Thank you for trying Sticky AMP!!

বিধ্বস্ত সড়কে দুর্ভোগের যাত্রা

পাহাড়-জলের বিছনাকান্দির নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ছুটে যান সিলেটের গোয়াইনঘাটে। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ২৬ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিতে সড়কপথে আধা ঘণ্টা লাগার কথা। কিন্তু সিলেট শহর থেকে বিমানবন্দরের পথ ধরে এগোতেই দেখা গেল সড়ক বিধ্বস্ত। বিছনাকান্দিতে পৌঁছাতে সময় লাগল সাড়ে তিন ঘণ্টা।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য এই দুই সাংবাদিক গত ৪ ও ৫ অক্টোবর সিলেট শহরে অবস্থান করেন। সেখান থেকে ৫ অক্টোবর দুপুরে তাঁরা বিছনাকান্দি যান। তাঁরা সরেজমিনে দেখেন, সড়কের বঙ্গবীর এলাকা থেকে হাদারপার পর্যন্ত ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। কোথাও কোথাও গর্তগুলো এক ফুট গভীর। কিছু এলাকায় ইট পর্যন্ত নেই। অনেক স্থান গ্রামের কাঁচা রাস্তার চেয়েও খারাপ। সিএনজিচালিত অটোরিকশার ঝাঁকুনিতে শরীর ব্যথা হয়ে যায়। এরই মধ্যে পাথরবোঝাই অতিরিক্ত ওজনের শত শত ট্রাক এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে।
ওই সড়ক এখনো বেহাল। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, ট্রাক চলাচল করায় এবং সঠিকভাবে সংস্কার না করায় সড়কের এই অবস্থা হয়েছে।

রুস্তমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা গাড়িশ্রমিক মজিবুর রহমান বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় অটোরিকশা চালক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের সমস্যা হচ্ছিল। এ পরিস্থিতিতে গাড়িচালক ও শ্রমিকেরা চাঁদা তুলে রাস্তা সংস্কার করেছেন।

সিলেট-বিছনাকান্দি সড়কের বিভিন্ন স্থান এখনো ভাঙাচোরা। এসব অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে যান। গত শুক্রবার সদর উপজেলার বড়শলা এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আল মামুন বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। অনেক জায়গা ভাঙাচোরা। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। যাত্রীদেরও দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক স্থানে যাত্রীদের গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে হয়। এতে আমাদের খারাপ লাগে।’

গোয়াইনঘাটের হাদারপাড় ঘাট এলাকায় ট্রলারে পর্যটক বহন করেন শেবুল মিয়া। তিনি বলেন, ‘রাস্তাঘাট খারাপ থাকায় পর্যটক অনেক কম আসছে। তবে রাস্তাঘাট ভালো হলে আরও অনেক পর্যটক আসত। রাস্তা ভালো হলে প্রতিদিন তিন-চারটা ট্রিপ দিতে পারতাম। এখন শুধু ছুটির দিন দুটি ট্রিপ মারতে পারি। অন্যান্য দিন একটি ট্রিপ হয়।’

সওজ ও এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-বিছনাকান্দি সড়কের ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে সিলেট থেকে সালুটিকর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর এবং সালুটিকর থেকে হাদারপাড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অধীন। সওজের অধীন থাকা সড়কের কাজ চলতি বর্ষা মৌসুমের আগে শুরু হয়েছিল। আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।

এলজিইডি জানিয়েছে, এলজিইডির ১৬ কিলোমিটার অংশের মধ্যে সালুটিকর থেকে বঙ্গবীর এলাকা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার অংশের কাজ চলছে। এই কাজ আগামী বছরের মার্চ মাসে শেষ হবে। এ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। এর বাইরে বঙ্গবীর এলাকা থেকে হাদারপার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ করতে একটি প্রকল্প নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। এই অংশের প্রায় পুরোটাই বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে।

সওজের সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত বলেন, দুই মাসের মধ্যে সড়কের সওজের অধীনে থাকা অংশের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
এলজিইডি সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম মহসিন জানান, সড়কের কিছু অংশের কাজ চলমান রয়েছে। এর বাইরে আরও ৬ কিলোমিটার অংশ রয়েছে। এই অংশের কাজের জন্য শিগগিরই প্রকল্প নেওয়া হবে।