Thank you for trying Sticky AMP!!

বিনা দোষে তিন মাস কারাবাস

প্রতীকী ছবি। এএফপি

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বিনা দোষে তিন মাস কারাবাসের পর জামিনে মুক্তি পেলেন সবুজ বিশ্বাস (২৪)। তিন মাস আগে যশোর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ একটি হত্যা মামলায় সবুজকে অপরাধী সাজিয়ে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কয়েক দফা শুনানির পর আজ বুধবার দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আয়শা নাসরিন তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

একই সঙ্গে নিরপরাধ ব্যক্তিকে অপরাধী সাজিয়ে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ভুল স্বীকার করে আদালতে লিখিত পত্র দিয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে যশোর সদর উপজেলায় মিঠু শেখ নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রের ৫ নম্বর আসামি যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা কদমতলা এলাকার মো. জনি (২৬)। কোতোয়ালি থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জনিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালাতে গেলে তাঁকে না পেয়ে প্রতিবেশী সবুজ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান। তখন থেকে বিনা দোষে কারাগারে বন্দী ছিলেন সবুজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজ বিশ্বাসের আইনজীবী মোস্তফা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মামলার প্রকৃত অপরাধী জনি। গ্রেপ্তার সবুজ বিশ্বাস নিরপরাধ। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে আদালত মামলার বাদী ও পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করেন। মামলার বাদী নিশ্চিত করার পর আদালত সবুজ বিশ্বাসকে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন। আদালত ওই হত্যা মামলায় সম্পূরক চার্জশিট দিয়ে সবুজ বিশ্বাসকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ারও আদেশ দেন।’

১৯ মে প্রকৃত আসামি মো. জনিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। জনি বর্তমানে কারাগারে আটক।

এদিকে বিনা অপরাধে তিন মাস কারাগারে আটকে রাখায় জরিমানা দাবি করেছেন সবুজ বিশ্বাসের বাবা খাইরুল বিশ্বাস। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ ছেলেকে কেন তিন মাস কারাগারে আটকে রাখা হলো? আমার ছেলেকে জামিনে মুক্ত করাসহ তিন মাসে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি আদালতের কাছে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করব।’

জানতে চাইলে মানবাধিকার উন্নয়ন উদ্যোগ ফাউন্ডেশনের যশোর শাখার সভাপতি আইনজীবী মো. রুহিন বালুজ বলেন, ‘নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে আটকে রাখা দণ্ডবিধি ২১৮ ধারা অনুযায়ী মারাত্মক অপরাধ। এতে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মেলে। এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি লিখিতভাবে ভুল স্বীকারও করেছেন। পুলিশের ওই লিখিত চিঠি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আমরা সবুজ বিশ্বাসের পক্ষে ক্ষতিপূরণসহ বিচার দাবি করব।’