Thank you for trying Sticky AMP!!

বিনিয়োগ করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক, এটা আমরা চাই না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। ছবি: ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ৭ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে বিএসইসিসহ পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শেয়ারবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করবেন, সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে বিনিয়োগ করবেন। বিনিয়োগ করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক, এটা আমরা চাই না।’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) রজতজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থনীতিকে বেগবান, বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের অবদান বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের জন্য বিএসইসিসহ পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী যে ৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন এর মধ্যে আছে—দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন; নতুন নতুন প্রডাক্ট চালুকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীর পছন্দের বাস্কেট (ঝুলি) সম্প্রসারিত ও বৈচিত্র্যময় করা; নতুন প্রডাক্ট চালু করার আর তার পরিচিতি, পরিচালন প্রক্রিয়া ও কৌশল সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা এবং বিএসইসির প্রশিক্ষণ একাডেমির কার্যক্রম জোরদার করে সর্বস্তরে বিনিয়োগ শিক্ষা বিস্তৃত করা। সেই সঙ্গে আর্থসামাজিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা ও গুরুত্ব, অন্যান্য সেক্টরের সঙ্গে পুঁজিবাজারের আন্তঃসম্পর্ক ইত্যাদি নানা বিষয়ে সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি মূলধনি কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্মল ক্যাপ বোর্ড চালু করা।
শেখ হাসিনা সব ধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সর্বত্র স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাসহ উল্লেখিত সব কর্মসূচি ও কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সবাইকে একযোগে কাজ করারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, এসব কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে এবং দেশের অগ্রগতির ধারা আরও বেগবান হবে। পাশাপাশি কমিশন নিয়ন্ত্রক ও সহায়তাকারী উভয় ভূমিকায় পুঁজিবাজার বিকাশে যে ধারা বজায় রেখেছে, তা অব্যাহত রাখবে এবং গতিশীল করবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং বিএসইসির চেয়ারম্যান মো. খায়রুল হোসেনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সাংসদ, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতা, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কোম্পানির পদস্থ কর্মকর্তারা এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ সিকিউরিটজি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কার্যাবলি নিয়ে একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ,‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২০৪৩ সালে যখন বিএসইসির সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে, অর্থনীতির অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে পুঁজিবাজারের অবস্থান আরও বলিষ্ঠতর হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর্থিক খাতের অন্যতম স্তম্ভ পুঁজিবাজার বিকাশে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। ফলে পুঁজিবাজার আজকের স্থিতিশীল অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দ্রুত বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।’ তিনি এ জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা, স্টক এক্সচেঞ্জ, বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (এসইবিআই) এবং বিএসইসির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চীনের কনসোর্টিয়াম ইতিমধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, এ অন্তর্ভুক্তিতে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীসহ স্টেকহোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবেন।