বিশৃঙ্খলার মোড় বহদ্দারহাট
উড়ালসড়কের নির্মাণকাজের কারণে সড়কের প্রস্থ প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। সংকুচিত হয়ে পড়া সড়কে দিনের বেশির ভাগ সময় যানজট লেগে থাকে। এর মধ্যে সড়কের এক পাশ ও পাশের ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে সারি সারি অস্থায়ী দোকান। এ অবস্থায় পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার ওপর দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট মোড়ের।
নগরের অন্যতম ব্যস্ত এই মোড় পার হয়ে যেতে হয় কক্সবাজার, বান্দরবান, কাপ্তাই, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও উত্তর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। এ ছাড়া এখানে রয়েছে পাইকারি সবজির দোকান, মাছের বাজার, ব্যাংক-বিমা প্রতিষ্ঠান, বিপণিবিতান ও খাবারের দোকান। সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা-ভোক্তাদের চাপ সামলাতে হয় বহদ্দারহাটের সরু এই সড়ককে।
গত বুধবার দুপুর ১২টা থেকে একটানা দেড় ঘণ্টা ওই মোড়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, যানজট কমেনি এক মুহূর্তের জন্যও। ৫২ ফুট চওড়া সড়কের অর্ধেকই ফ্লাইওভারের দখলে। পাশাপাশি এই মোড়ের বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার থেকে চান্দগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড পর্যন্ত সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাত পোশাক, গৃহস্থালি সামগ্রী ও ফলের দোকানিদের দখলে চলে গেছে। সব মিলিয়ে অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা এক শরও বেশি হবে। রমজান ও ঈদ সামনে রেখে অনেকে দোকান বসিয়েছেন এখানে। এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে।
সড়কের একাংশ দখল করে পোশাকের পসরা নিয়ে বসা চাঁদপুরের মোহাম্মদ মনির জানান, রমজানে বাড়তি আয়ের আশায় গত সপ্তাহে এখানে দোকান দিয়েছেন। বহদ্দারহাট বাজারের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ভাড়ার বিনিময়ে ফুটপাতে জায়গা পেয়েছেন তিনি। ভাড়া আদায়কারী ব্যক্তির নাম জানতে চাইলে তিনি বলতে অস্বীকার করেন।
সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে যানজট ও মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হচ্ছিল। পথচারীরা বলছেন, ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে এমনিতেই ভোগান্তি বেড়েছে, তার ওপর ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
ফুটপাত ছেড়ে সড়ক দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা আশিস কুমার নাথ। তাঁকে থামিয়ে এমন যানজট সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, উড়ালসড়কের (ফ্লাইওভার) নির্মাণকাজ ও ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দাদের ভোগান্তির শেষ নেই। এর সঙ্গে বহদ্দারহাট মোড়ে ফুটপাত ও সড়কের একাংশ হকারদের দখলে চলে যাওয়ায় এখানে নরকের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে কাপ্তাই সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত বহদ্দারহাট উড়ালসড়কের বাকি অংশের কাজ আরও তিন মাস ধরে চলবে বলে জানিয়েছেন সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান। একই সঙ্গে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িও চলবে আগামী বছর পর্যন্ত। ফলে শিগগিরই বহদ্দারহাট মোড়ের যানজট কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার সরিয়ে যানজট কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহদ্দারহাট মোড়ে অনেক হকার দোকান বসিয়েছেন। হকার সরিয়ে দিলেও অনেক সময় কাজ হয় না। ওই জায়গায় আবার রিকশা ও অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে ওঠে। এ নিয়ে ওই মোড়ে সবাই যন্ত্রণা পোহাচ্ছে।’
আরও পড়ুন
-
কিডনি ব্যবসায়ীরা পার পাচ্ছেন দায়সারা তদন্তে
-
মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
-
বিদ্যালয়ের শৌচাগারে ৬ ঘণ্টা আটকে ছিল এক শিশু, পরে তালা ভেঙে উদ্ধার
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার