Thank you for trying Sticky AMP!!

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের করে গড়তে শিক্ষকদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তনে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ছবি: ফোকাস বাংলা

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের সবাইকে নিজ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনারা (শিক্ষক) জাতির বাতিঘর। আপনাদের মেধা, শ্রম ও ভালোবাসায় তৈরি হয় জাতির তরুণ প্রজন্ম। আপনাদের শিক্ষা ও আদর্শই একজন শিক্ষার্থীর জীবনের পাথেয় ও ব্রত হয়। আপনারা জ্ঞানার্জন, জ্ঞান সৃষ্টি ও জ্ঞান বিতরণ করে জাতীয় দায়িত্ব পালন করছেন। সাধারণ মানুষ আপনাদের ওপর ভরসাও করে বেশি। জাতি আপনাদের প্রতি সবিশেষ কৃতজ্ঞ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আমার অনুরোধ, আসুন আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলি, পৃথিবীর তাবৎ জ্ঞানের দরজা খুলে মানবজাতিকে কল্যাণ ও অগ্রগতির পথ দেখাই।’

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) তৃতীয় সমাবর্তনে দেওয়া বক্তব্য রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

কৃতী শিক্ষার্থীদের পদক পরিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি। ছবি: ফোকাস বাংলা

এককালে এ দেশ জ্ঞানের নানা শাখার আঁতুড়ঘর ছিল জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘নানা দেশ থেকে বিদ্যার্থীরা এখানে ছুটে আসতেন জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে। আমি চাই, প্রাচ্য-প্রতীচ্য জ্ঞানের মিশ্রণ ঘটিয়ে আপনারা বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানতীর্থ করে তুলবেন।’

প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এ জন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে নিরন্তর গবেষণা। নিত্যনতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও তার প্রসারের ওপরই নির্ভর করে দেশের সমৃদ্ধি। বিশ্বায়নের এ যুগে রাষ্ট্র ও জনগণের চাহিদা মোকাবিলায় প্রযুক্তিগত জ্ঞান ব্যতীত গত্যন্তর নেই। তথ্যপ্রযুক্তিতে সক্ষমতার ফলেই উন্নয়নকে আজ দেশের আপামর জনসাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তোমরা আরও দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’

দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তরুণ সমাজকে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তোমরা ভালো করেই জানো, তোমাদের বিদ্যালাভ ও সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে যাঁরা শক্তি, সাহস ও অর্থ জুগিয়েছেন, তাঁরা হচ্ছেন এ দেশের জনগণ। তাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি জীবনব্যাপী তোমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা জাতি প্রত্যাশা করে।’

সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন রাষ্ট্রপতি। ছবি: ইউএনবি

শাবিপ্রবির কার্যক্রমের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শে অনুপ্রাণিত, জঙ্গি ও মৌলবাদমুক্ত বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়ার নেপথ্যে ভূমিকা রেখে ভবিষ্যতেও তার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখবে।

শাবিপ্রবিতে ১২ বছর পর তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলো। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল প্রথম এবং ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন হয়।

এবারের সমাবর্তন থেকে সনদ গ্রহণের জন্য মোট ৬ হাজার ৭৫০ জন শিক্ষার্থী নাম নিবন্ধন করেন। রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক পেয়েছেন ২০ শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে নিজ বিভাগে প্রথম হওয়া ৮৯ শিক্ষার্থী পেয়েছেন উপাচার্য সম্মাননা।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন কৃতী শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবেরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।