Thank you for trying Sticky AMP!!

বৃক্ষমেলায় তিন লাখ টাকার গাছ

বৃক্ষমেলার একটি স্টলে শোভাবর্ধনকারী অ্যালেরিয়া। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো

গাছের নাম নলিনী পাম। থাইল্যান্ড থেকে আনা শোভাবর্ধনকারী এই গাছের দাম হাঁকা হচ্ছে তিন লাখ টাকা। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাণিজ্য মেলা মাঠে আয়োজিত বৃক্ষমেলায় দেখা মিলবে এই গাছ।
বৃক্ষমেলার বিভিন্ন স্টলে নলিনী পাম ছাড়াও বিচিত্র ধরনের বিদেশি ফুল, ফল ও শোভাবর্ধনকারী গাছ বিক্রি হচ্ছে।
‘বৃক্ষরোপণ করে যে সম্পদশালী হয় সে’ স্লোগান নিয়ে আগারগাঁওয়ের বাণিজ্য মেলা মাঠে গত রোববার এই মেলা শুরু হয়।
মেলায় হোসেন নার্সারির স্টলে আছে নলিনী পামগাছ। এই স্টলে বেশি বিক্রি হয় বিদেশি গাছ। নার্সারির মালিক সাদ্দাম হোসেনের দাবি, তাঁর স্টলের এই নলিনী পামগাছের বয়স ৬০ বছরের বেশি। তাঁর বাবা ১৮ বছর আগে থাইল্যান্ড থেকে গাছটি এনেছেন। তিনি বলেন, ঢাকায় গাছ লাগানোর জন্য বারান্দা আর বাসার ছাদই ভরসা। তাই তিনি বারান্দা ও ছাদে লাগানোর উপযোগী গাছ ও গাছের চারা বিক্রি করছেন।

নলিনী পাম। এটির দাম হাঁকা হচ্ছে তিন লাখ টাকা

সাদ্দামের স্টলে আছে অ্যালেরিয়া নামের একধরনের শোভাবর্ধনকারী লতাজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা দেখতে অনেকটা আলু পাতার মতো।
মেলায় মিলছে বিদেশি ‘গোল্ডেন বল’ ক্যাকটাস। এই ক্যাকটাসের দাম হাঁকা হচ্ছে তিন লাখ টাকা। বিক্রেতারা জানালেন, রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্নে খরচ বেশি, তাই এগুলোর দামও বেশি।
মেলায় আরও আছে থাই আম, নাম ‘ই টু আর টু’। আরও আছে চার কেজি ওজনের আম ‘ফোর কেজি’। মালয়েশিয়ার নারকেল মিল্ক কোকোনাট, সাদা রঙের থাই অ্যারোমেটিক জুঁই, মিসরীয় ডুমুর, থাই সফেদা, থাই পদ্ম, অ্যামাজন লিলি, প্যারাডাইস ফুল, শোভাবর্ধনকারী গাছ পয়েন, গোল্ডেন বোতলব্রাশসহ অসংখ্য রকমের গাছ। আছে সৌদি খেজুরগাছ, পিচ, থাই ডেউয়া, চায়নিজ মাল্টা, থাই শসা।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) স্টল থেকে পোলাও পাতা আর লেমন গ্রাস কেনেন কলেজশিক্ষক রুবিনা তাসমিন। তিনি বলেন, সেন্ট মার্টিনে গিয়ে তিনি পোলাও পাতার নাম শুনেছেন। এরপর বহুদিন খুঁজেও পাননি। মেলায় বিএডিসির স্টলে দেখতে পেয়ে কিনে নিয়েছেন।
বিএডিসির সহকারী পরিচালক (উদ্যান পালন) রিপন শিকদার বলেন, তাঁদের স্টলে মহুয়া, পলাশ ও বিলুপ্তপ্রায় নাগলিঙ্গমের চারাগাছ আছে। এ ছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ঔষধি গাছ রেখেছেন। এ ছাড়া টক আতা, মিসরীয় ডুমুর, ভ্যানিলা অর্কিড, নীল গাছ, চুই ঝাল গাছ, জয়তুনসহ (জলপাই) বিভিন্ন ধরনের গাছ বিক্রি হচ্ছে। তাঁদের স্টলে টবে বিক্রি হচ্ছে দেশি জাতের ছোট আকৃতির জলঢুগি আনারস।
মেলায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দেশি জাতের আম ও বারোমাসি আম। আছে হরেক রকমের লতা ও গুল্মজাতীয় গাছ। ক্যাকটাস, অর্কিড, ঔষধি গাছ তো আছেই।
মেলায় আছে আমলকি, পেয়ারা, লেবু, জাম্বুরা, আমড়া, কামরাঙাসহ হরেক রকমের দেশি-বিদেশি ফল। এগুলোর দাম শুরু হয়েছে ১০০ টাকা থেকে। তবে যেসব গাছে ফল ধরেনি, সেগুলোর দাম আরেকটু কম।
মেলার কয়েকটি স্টলে বিক্রি হচ্ছে বনসাই। এগুলোর কোনো কোনোটির বয়স ২০ থেকে ২৫ বছর বলে জানান শ্যামলিমা নামের স্টলের বিক্রেতা রফিক। এগুলোর দামও বেশি। ২০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
মেলায় কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির স্টলে সবজি চারার দাম শুরু হয়েছে ১০ টাকা থেকে। এ ছাড়া বারোমাসি আমগাছের চারা ১০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, মিসরীয় ডুমুরের দাম ২ হাজার টাকা।
মেলায় গাছের চারা ছাড়াও এগুলোর পরিচর্যার জন্য আছে জৈব সার, বীজ, কীটনাশক, বাগান পরিচর্যার সরঞ্জাম, ফুলের টব এবং গাছের খাবার ভিটামিন। মিলছে গাছসংক্রান্ত বইও।
ঘাসও পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। মায়ের কবরের ওপর লাগাতে মেলায় ঘাস কিনতে এসেছেন শায়েরা বেগম।
সহকারী বন সংরক্ষক আবদুল করিম জানান, এবারের বৃক্ষমেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১০০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ বিক্রি হচ্ছে। মেলা শেষ হবে আগামী ৩ জুলাই।