Thank you for trying Sticky AMP!!

বৈরুতের বিস্ফোরণে ৩ বাংলাদেশি নিহত

বৈরুতের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: এএফপি

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস দুই বাংলাদেশির পরিচয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয়প্রধান আবদুল্লাহ আল মামুন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর জেনেছি। হাসপাতাল থেকে দুজনের পরিচয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পেরেছি। তাঁদের একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেহেদি হাসান। অন্যজন মাদারীপুরের মিজান। দুজনই এখানে বৈধভাবে কাজ করছিলেন। এ ছাড়া বিস্ফোরণে ৫৯ জন প্রবাসী বাংলাদেশির আহত হওয়ার তথ্য জানা গেছে। দুটি হাসপাতাল থেকে এই তথ্য জেনেছি। অন্য হাসপাতালগুলোয় যোগাযোগ করছি।’

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হননি—এমন অনেক আহত বাংলাদেশি রয়েছেন। তবে তাঁদের সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি। লেবাননে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে আর কেউ হতাহত হয়েছেন কি না, এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে।

মিজান

গতকালের বিস্ফোরণের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় ঢুকছি, এমন সময় চারতলায় আমার ফ্ল্যাটে কম্পন অনুভব করলাম। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলাম। নামার পর দেখলাম, অনেক লোকজন জড়ো হয়েছেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি, লাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী। প্রথমে ভেবেছিলাম, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় প্রতিনিয়ত হামলার ঘটনা ঘটে, এটা হয়তো তেমন কিছু। ১৫ মিনিটের মধ্যে ইউটিউব ও বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত খবর থেকে জানি, বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’

লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয়প্রধান জানান, বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের খবর জানার পর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বিজয়’-এর খোঁজ নিই। নৌবাহিনীর সদস্যরা জানান, তাঁদের জাহাজটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নৌবাহিনীর আহত সদস্যদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাবু সাহা গত ২৫ বছর ধরে লেবাননে কাজ করছেন। তিনি আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেহেদী হাসানের মরদেহ মাউন্ট লেবাননে রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাদেশ্বরা গ্রামের মেহেদী বৈরুতের আশরাফি এলাকার একটি সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। এ ছাড়া জিমাইজি এলাকায় কাজ করতেন মিজান।

বাবু সাহা আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ জন বাংলাদেশি আহত হওয়ার খবর শোনা যাচ্ছে। হতাহত ব্যক্তিদের ব্যাপারে প্রবাসীরা দূতাবাসকে তথ্য জানাচ্ছেন। দূতাবাসও চিকিৎসাসহায়তাসহ নানাভাবে প্রবাসীদের সহায়তা করছে।

বিস্ফোরণের সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে বাবু সাহা বলেন, ‘মঙ্গলবার বিস্ফোরণের সময়টাতে বাসার পাশের পার্কিংয়ে বসে ছিলাম। হঠাৎ ভূমিকম্পের মতো কিছু একটা ঘটেছে বলে মনে হলো। উঠে দাঁড়ানোর পর মনে হলো, ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। আমি কোন দিকে যাব, ভেবে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ দেখলাম ভবনের কাচ ভেঙে পড়ছে। মিনিট দশেক পরে আকাশে দেখতে পেলাম ধোঁয়ার কুণ্ডলী।’