Thank you for trying Sticky AMP!!

বৈশাখ একলা

পয়লা না, ‘একলা’ বৈশাখ! সমস্ত হিসাব বদলে দিয়েছে করোনাভাইরাস। বদলেছে দীর্ঘ ৫৩ বছরের ইতিহাস। শুধু ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ বাদে ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে হয়ে আসছিল ছায়ানটের প্রভাতী আয়োজন। কিন্তু এবার সেই আয়োজন নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়নি। ফাঁকা পড়ে আছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা পার্ক।

আজ কোনো প্রেমিক মিষ্টি করে তার প্রেমিকার খোঁপায় ফুল গুঁজে দিয়ে বলতে পারছেন না ‘শুভ নববর্ষ’। লালপেড়ে সাদা শাড়ি, সঙ্গে রেশমি চুড়ি আর পাঞ্জাবি বা ফতুয়া পরে কেউ বের হননি!

বর্ষবরণের এই নিস্তব্ধতা আঘাত করেছে ব্যবসায়ীদের মনেও। ক্ষতি হয়েছে ফুটপাতের হকার থেকে শুরু করে বিপণিবিতানগুলোর। বাদ যাননি ফুল বিক্রেতা, চা-ওয়ালা কেউই। নববর্ষকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। যার পুরোটাই এবার বন্ধ।
কোভিড-১৯ প্রতিদিন ছড়িয়ে পড়ছে প্রিয় বাংলায়। দিনকে দিন বাড়ছেই আক্রান্তের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে আর যা–ই হোক, উৎসব হয় না। এখন ঘরে থাকাটাই সবচেয়ে বেশি দরকারি। আজ রবী ঠাকুরের ‘আষাঢ়’ কবিতার পঙক্তি এখন খুবই মনে পড়ছে—

খেয়া-পারাপার বন্ধ হয়েছে আজি রে,
ওগো, আজ তোরা যাস নে গো, তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।

আজ না হয় কাল, কোনো এক সকালে আবার সব চঞ্চল হয়ে উঠবে। শিশুরা মাঠে খেলবে। তরুণ-তরুণী আড্ডায় মাতবে। আবার কোনো বৈশাখে চারুকলায় উন্মাদনা আসবে, রমনার বটমূলে ছায়ানটের গান বাজবে, মঙ্গল শোভাযাত্রা হবে, পান্তা–ইলিশ-কাঁচামরিচ থাকবে, বর্ষবরণের নতুন সাজ থাকবে, মেলা হবে, ঢাকঢোল বাজবে, দুনিয়া সাজবে!

এখন শুধু অপেক্ষা। বেঁচে থাকার প্রতিক্ষা। নতুন দুনিয়ার স্বপ্ন আর ভালো কিছুর জন্য।