Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যাংক খাত নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলা নিয়ে সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের কয়েকজন সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতেরও সমালোচনা করেন। 

আজ রোববার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে কয়েকজন সাংসদ ব্যাংক খাতে লুটপাটের সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজকের বৈঠকে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনা হয়।

সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ব্যাংক খাতের লুটপাটের ঘটনাকে সুলতান মাহমুদ গজনীর ভারতে সোমনাথ মন্দির লুটের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, সোমনাথ মন্দির লুটের পর আর এত বড় লুট হয়নি।

ফিরোজ রশীদ বলেন, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) ব্যাংক ডাকাতদের শাস্তি চায়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘অর্থমন্ত্রী ডাকাতদের কেন সুযোগ দিলেন?’ তিনি আরও বলেন, ব্যাংক মালিকেরা ভোট দেবেন না। নির্বাচনের আগে বড় লোকেরা সবাই বিদেশে চলে যাবে। গরিব মজুরেরা ভোট দেবেন।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে ফিরোজ রশীদ আরও বলেন, ‘ভোট বাড়াচ্ছেন না। তেলা মাথায় তেল দিচ্ছেন।’ প্রস্তাবিত বাজেটকে ভুয়া আখ্যা দিয়ে ফিরোজ রশীদ বলেন, বাজেটে ধনী ও ব্যাংক ডাকাতদের উৎসাহী করা হয়েছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআইয়ের প্রতিক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে সরকারি দলের সদস্য আলী আশরাফ বলেন, ব্যাংকিং খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা না হলে আর্থিক খাত ভেঙে পড়বে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে না। তিনি এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

আলী আশরাফ বলেন, ব্যাংক খাতে লুটপাটকারীদের ধরা হলে মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে, সুশাসন নিশ্চিত হবে। দৃঢ়তার সঙ্গে এগুলো করতে হবে।

ব্যাংক, বিমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করেন স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজি। তিনি বলেন, আবার ব্যাংক মালিকদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এক পরিবার থেকে চারজনকে ব্যাংকের পরিচালক করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন আবার তাদের কর কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চললে ব্যাংক বলতে কিছু থাকবে না।

রুস্তম আলী ফরাজী আগামী সরকারের জন্য না রেখে অর্থমন্ত্রীকেই ব্যাংক খাতে সংস্কার আনার জন্য কমিশন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখে নিরাপত্তার জন্য কিন্তু এখন মানুষ ভীত হয়ে গেছে।

প্রশাসনে দুর্নীতিরও কড়া সমালোচনা করেন রুস্তম আলী। তিনি বলেন, প্রত্যেক স্তরে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। অকল্পনীয়ভাবে বেতন বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার পরও দুর্নীতি হচ্ছে। সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বেতন নেবেন, না উপরি, ঘুষ খাবেন। যেকোনো একটা নেন, দুটো চলবে না।’

জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ২-৩ বছর ধরে বারবার ব্যাংক লুট নিয়ে তাঁরা কথা বলে যাচ্ছেন। লুটকারীরা টাকা নিয়ে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী মানুষের করের টাকা দিয়ে ব্যাংকের মূলধন সরবরাহ করে যাচ্ছেন।

ব্যাংক সংস্কারে কমিশন করার বিষয় অর্থমন্ত্রী কিছু না বলার সমালোচনা করে পীর ফজলুর রহমান বলেন, সংস্কার কমিশন গঠিত হলে কারা লুটপাট করেছে, কীভাবে করেছে, সব বেরিয়ে আসত। নিশ্চয় অর্থমন্ত্রী এটা প্রকাশ করতে চান না।

সম্পূরক বাজেটের ওপর আরও আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেন, সোহরাব উদ্দিন, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর।