Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ

প্রতীকী ছবি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। সেই মামলা তুলে নিতে এখন চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে।

আখাউড়ার ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দা মো. হারুন মিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে দায়ের করা মামলার আরজিতে তিনি বলেন, মাদক বিক্রেতাদের পক্ষ নিয়ে পুলিশ তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন এবং ক্রসফায়ারের ভয় দেখান। তারপর টাকা দাবি করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তাঁকে ক্রসফায়ারে হত্যারও হুমকি দেওয়া হয়।

আদালত আদেশে পরিদর্শক পর্যায়ের কাউকে দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

হারুন মিয়া প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, বুধবার মামলার পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁকে মুঠোফোনে ছয় থেকে সাতবার ফোন করে মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয়েছে। গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে গেলে আখাউড়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নিতাই চন্দ্র দাস, মামলার আসামি এসআই হুমায়ুন কবীর ও মতিউর রহমান এবং এএসআই খোরশেদ আলম সাধারণ পোশাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলা তুলে নিতে বলেন। পরে দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে একটি ফোন আসে। তখনো তাঁকে ফোন করে বলা হয় মামলা না তুললে ক্রসফায়ার করা হবে।

আখাউড়া থানার সেকেন্ড অফিসারের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) নিতাই চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগটি সত্য নয়। আমরা কোর্টে যাইনি। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

স্বপদে বহাল এসপি-ওসি

রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন এবং ঢাকার কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমানসহ পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় ও শারীরিক নির্যাতন। নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলেও স্বপদে বহাল রয়েছেন তাঁরা।

রাজশাহী রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল এ কে এম হাফিজ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করছে। আদালতের নির্দেশে যখন কোনো অভিযোগ তদন্ত হয়, সেটিই সর্বোচ্চ তদন্ত। তাই তাঁরা আলাদাভাবে কোনো কমিটি করেননি। এসপি বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডির বাসা থেকে ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন গোলাম মোস্তফা।

অন্যদিকে, সিগারেট খাওয়ার মিথ্যা অভিযোগে মামলায় গ্রেপ্তার এবং ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে সোহেল মীর নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকেও সাড়ে তিন লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগে মামলা হয় কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুরসহ থানার পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। তাঁরাও এখনো স্বপদে বহাল আছেন।

ওসি মিজানুর রহমান অবশ্য প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, তিনিসহ যে পুলিশের যে পাঁচ সদস্যের নামে অভিযোগ উঠেছে, সেটা তিনি নিজেই খতিয়ে দেখছেন। তাঁরা সবাই যাঁর যাঁর পদে আছেন।

সেই ওসির ব্যাপারে খোঁজ

লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ওসির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

দিন কয়েক আগে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মাহফুজ আলমের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে ওসি মাহফুজ আলম তাঁর অফিস কক্ষে মারামারির মামলায় প্রধান অভিযুক্তকে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে কখন কী মামলা করতে হবে, কীভাবে শায়েস্তা করতে হবে, সে বিষয় পরামর্শ দিতে দেখা যায়। তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে টাকা দিতে বলেন। আর নিজে ঘুষ নেওয়ার সময় সানিটাইজার দিয়ে নিজের এবং ঘুষদাতার হাত জীবাণুমুক্ত করিয়ে নেন।

ওসি মাহফুজ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ওই ভিডিও গোপনে ধারণ করা হয়েছে।’

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)