Thank you for trying Sticky AMP!!

ভক্ত-শিষ্যে সরব আখড়াবাড়ি

তিন দিনের লালন স্মরণোৎসবে লালনের মাজারে ছোট ছোট আসরে ভক্ত-শিষ্যরা লালনের গানে মজেছে। গতকাল কুষ্টিয়ায় ছেঁউড়িয়ায়। ছবি: প্রথম আলো

শত ভক্ত, অনুসারী। হাজারো দর্শনার্থী। সবাই এসেছেন আখড়াবাড়িতে। গান করছেন, বাণী শুনছেন।

দিন দিন এই ভক্ত–জনতার সমাগম বাড়ছেই। কেন? খেলাফতধারী প্রবীণ ফকির নহির শাহ বললেন, গান ও বাণীই হচ্ছে লালন শাহের জীবন। বিপুল ভক্তকুল বলে দিচ্ছে, লালনের গান আর বাণীর টানেই ১২৮ বছর ধরে এই আখড়াবাড়িতে মানুষের ছুটে আসা।

গতকাল মঙ্গলবার পয়লা কার্তিক ছিল লালন শাহের তিরোধান দিবস। কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আখড়াবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনের অনুষ্ঠান। আঙিনায় বিকেল সাড়ে চারটায় পরিপাটি হয়ে বসে গেছেন সাধু গুরুরা। তাঁদের ঘিরে ভক্ত–শিষ্যরা। তারপর ‘আঁচলা ঝোলা’ থেকে পাঁচটি চাল বের করে মুখে পুরে পানি দিয়ে গিলতেই শুরু হলো অধিবাস। প্রবীণ মহররম শাহ বললেন, যে ‘আঁচলা’ থেকে চাল বের করা হলো, সেটাই ‘ফকিরের সংসার’।

এক বাউল সাধু বললেন, লালনের তিরোধানে দৈন্য বা আবেদন, প্রার্থনামূলক গান গাওয়া উচিত। একজন গেয়ে উঠলেন, ‘আমি ওপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়, পারে লয়ে যাও আমায়।’

সাধু গুরুরা বলেন, স্থূল, প্রবত্ত, সাধক ও সিদ্ধি—এই চার পদেই সীমাবদ্ধ লালন শাহের অনুসারীরা। সিদ্ধি হচ্ছে সর্বশেষ পদ ‘খেলাফত,’ যিনি জ্ঞান দেবেন। এরপর আগমনী প্রার্থনা গান—‘কোথায় হে দয়াল কান্ডারী...’। সন্ধ্যায় শুরু হয় দৈন্য গান। ‘ক্ষম ক্ষম অপরাধ ওহে দিন নাথ...’। সৃষ্টিকর্তার কাছে পরিত্রাণ চাওয়া। সন্ধ্যা–ভক্তিতে ধূপ–ধোঁয়া দিয়ে গুরুভক্তি শুরু—‘গুরু দোহায় তোমার মনকে আমার লও গো সুপথে।’

রাত আটটায় মুড়ি–জলযোগ করে শুরু হয় পুনঃপাত্রে আগমনী অর্থাৎ আনন্দ অনুষ্ঠান। লালনের পদ-পদাবলি শিষ্যদের ব্যাখ্যা করে শোনান গুরুরা। রাত একটা পর্যন্ত চলে এ ধারা। অধিবাস সেবার (সবজি–ডাল–ভাত) মধ্য দিয়ে প্রথম দিন শেষ হয়।

এর আগে সন্ধ্যায় কালী নদীর পাড়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ তিন দিনের আয়োজনের উদ্বোধন করেন। আলোচক ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য শাহিনুর রহমান। লালন একাডেমির আয়োজনে ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় হয় এই আয়োজন।