Thank you for trying Sticky AMP!!

ভাঙন কমলেও তিস্তার পারের মানুষের দুর্ভোগ কমেনি

বন্যার পানি নেমে গেলেও কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার তিস্তা পারের মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। একদিকে নদীভাঙন যেমন তাদের বিধ্বস্ত করে দিয়ে গেছে, অন্যদিকে বছরের এ সময়টায় তাদের হাতে নেই কোনো কাজ। ফলে ধারদেনা করেও দুবেলা দুমুঠো খেয়ে আশ্বিনের এ দিনগুলো পাড়ি দিতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে তাদের।
উপজেলা সদর থেকে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরার হাটের দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তার প্রবল স্রোতে ডাংরার হাট থেকে চতুড়া বাঁধের মাথা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার ভাঙনের শিকার হয়েছে। এতে এলাকায় পাউবো নদীতীর রক্ষা বাঁধ, বসতভিটা, আবাদি জমি, গাছপালা তছনছ হয়ে গেছে। নদীভাঙা পরিবারগুলো টিকে থাকা বাঁধের অংশটুকুতে কোনো রকমে ঠাঁই নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয় লোকজন জানান, ১৫ দিন আগে তিস্তার প্রবল স্রোতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
চতুড়া বাঁধের শেষ মাথায় ছালেহা বেগমের বাড়ি। তাঁর বসতবাড়ির অর্ধেক জমিই এর মধ্যে নদীতে বিলীন গেছে। শুধু একটি ঘর টিকে আছে। ঘরটির কিনারা ঘেঁষে নদী বয়ে চলেছে। এ ঘরেই পরিবারটি বসবাস করছে। ছালেহা বেগম জানান, বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দেয়। একটি ঘর সরিয়ে নেন কোনো মতে। নদী যেভাবে বর্তমান ঘরটির একেবারে পাশে চলে এসেছে, তাতে দু-এক দিনের মধ্যে এ ঘরটাও সরাতে হবে বলে মনে হচ্ছে। ছালেহা বেগম আরও বলেন, কিন্তু দরকার হলেও টাকার অভাবে সরাতে পারছেন না ঘরটি। তাঁর স্বামী মিয়ার উদ্দিন চরে ঘাস কাটতে গেছেন। ওই ঘাস বিক্রি করে চাল নিয়ে আসবেন। তারপর পরিবারটির খাওয়া জুটবে। তাই চাইলেও ঘর সরাতে পারছেন না।
কিছু দূর এগিয়ে দেখা যায়, বাঁধের সামান্য যে আংশ টিকে আছে সেখানে ছাপরা তুলে বসবাস করছেন আবদুল বাতেন। তিনি জানান, বাঁধে বসবাস করা সব পরিবারই নদীভাঙা। তিনি বলেন, ‘হামারা দিন পারি দেই হাওলাদ করি। চেয়ারম্যান ১৫ দিন আগে ২০ কেজি করে চাউল দিছিল। এ ছাড়া আর কুনো সাহায্য পাই নাই।’
ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম বলেন, ‘বর্তমানে ভাঙন কিছুটা কমলেও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অসহায় মানুষগুলোর জন্য কিছুই করতে পারি নাই। এখন তাদের হাতে কাজও নাই। এদের চাউল ও গৃহনির্মাণ সহায়তা দিতে পারলে উপকার হতো।’