Thank you for trying Sticky AMP!!

ভিন্ন সুর মিয়ানমারের

প্রথম আলো ফাইল ছবি
>
  • বাংলাদেশের সঙ্গে গত মঙ্গলবার মিয়ানমারের বৈঠক হয়।
  • শূন্যরেখায় আটকে থাকা সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়।
  • এখন মিয়ানমারের গণমাধ্যম বলেছে, ত্রাণ সহায়তার কারণে রোহিঙ্গারা শূন্যরেখা থেকে সরছে না।

বাংলাদেশের সঙ্গে গত মঙ্গলবার বৈঠকে মিয়ানমার নিঃশর্তভাবে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখায় আটকে থাকা সাড়ে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাকে উত্তর রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়। ওই বৈঠকের এক দিন পর এখন অন্য কথা বলছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

মিয়ানমারের এই অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে গত মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মংডু জেলার প্রশাসক ইয়ে হুটস আলোচনায় আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাই শুধু নয়, আন্তর্জাতিক রেডক্রস আর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কথাও তুলেছিল। বাংলাদেশ স্পষ্ট করেই মিয়ানমারকে বলেছে, শূন্যরেখায় কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। তবে কেউ যদি পরোক্ষভাবে মানবিক কোনো সহযোগিতা রোহিঙ্গাদের দিয়ে থাকে, সেটা আটকানোর সুযোগ সীমিত। আর মাসের পর মাস যখন হাজার হাজার মানুষ এভাবে দুই দেশের সীমান্তের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন তাদের মানবিক সহায়তা করাটাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

শূন্যরেখায় রোহিঙ্গাদের সরানোর ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে মিয়ানমার শর্ত হিসেবে জুড়ে দেবে কি না, জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, সেই সুযোগ নেই। কারণ, বৈঠকে মিয়ানমার স্পষ্ট করে বলেছে, আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের তালিকা করা হবে। এরপর তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এখন অন্য কথা বলে লাভ নেই।

শূন্যরেখায় আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের ফেরানো নিয়ে মিয়ানমারের ভিন্ন সুরকে বাংলাদেশ অগ্রাহ্য করলেও অতীত অন্য কথা বলছে। এমনকি এবারের রোহিঙ্গা ঢলের পর মিয়ানমারের সঙ্গে যত আলোচনা হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নানা অজুহাত দিয়েছে দেশটি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, মিয়ানমার রাখাইনকে পুরোপুরি রোহিঙ্গাশূন্য করার কৌশল থেকে সরছে না। বিভিন্ন সময় নানান চাপের কারণে তারা এটা-সেটা করার কথা বলেও তা করছে না। কাজেই শূন্যরেখায় আটকে থাকা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ মিয়ানমার করছে, কাণ্ডজ্ঞান থাকলে কারও এটা করার কথা নয়। এ থেকে স্পষ্ট যে মিয়ানমার শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে থাকতে দেবে না।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইসচিআর) জোর দিয়ে বলেছে, সময় ও পরিস্থিতি এলে লোকজনের যেমন ফিরে যাওয়ার অধিকার আছে, তেমনি কোথাও আশ্রয় নেওয়ার অধিকারও তাদের রয়েছে। সংস্থাটির মুখপাত্র আন্দ্রেজ মেহেচ্চি গত মঙ্গলবার জেনেভা থেকে এক বিবৃতিতে বলেন, সহিংসতার ভয়ে যেসব লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি ওই সব লোকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের আলোচনায় তাদের যুক্ত রাখতে হবে। আর ফেরত পাঠানোর আগে তা হতে হবে স্বেচ্ছায় এবং তাদের অবহিত করে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হিসাব অনুযায়ী তমব্রু খালের কাছে শূন্যরেখায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবারের নারী, পুরুষ, শিশু অবস্থান করছে। তাদের অনেক প্রতিনিধি ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাই তারা নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশে আশ্রয় চাইছে।

আইসিসির কাছে যেতে ১০০ ব্রিটিশ এমপির চিঠি

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ নৃশংসতার অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং লাইয়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তদন্ত চালানোর বিষয়ে অনুরোধ জানাতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে চিঠি লিখেছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি রুশনারা আলী। গতকাল ১০০ ব্রিটিশ এমপির পক্ষে রুশনারা আলী ওই চিঠি লিখেছেন। এ নিয়ে রুশনারা আলী তাঁর টুইটে লিখেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভয়াবহ নৃশংসতাকে অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।