Thank you for trying Sticky AMP!!

ভুল-বোঝাবুঝি, কাজের সময় সংযোগ দেওয়ায় প্রাণ গেল বিদ্যুৎ-কর্মীর

বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে কাজ করতে খুঁটিতে উঠেছিলেন বিদ্যুৎকর্মী দুলাল হোসেন (৩০)। তাঁর কাজ শেষ না হতেই বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মী ভুল করে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে দুলাল হোসেন চিরদিনের জন্য বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলে পড়েন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কামার ধাদাস গ্রামে।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুলালের সহকর্মীরা এক বিদ্যুৎকর্মীকে মারধর করেছেন। আর দুলালের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 


দুলাল হোসেনের বাড়ি নওগাঁ জেলা সদরের চকবিরাম মহল্লায়। তাঁর বাবার নাম তাজন আলী। তিনি ‘মেসার্স মোমেন কন্সট্রাকশন’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পুঠিয়া জোনের লাইন মেরামতের কাজ করতে এসেছিলেন।
দুলালের সহকর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পুঠিয়া জোনাল অফিসের লাইনম্যান শামসুল করিম। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যুৎ বিভাগের পুঠিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নের কামার ধাদাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে পল্লী বিদ্যুতের লাইন মেরামতের কাজ করছিলেন দুলাল। এ সময় পুঠিয়ার বানেশ্বর নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ওই এলাকার বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করা ছিল। তাঁর কাজ শেষ হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে থাকা বিদ্যুৎকর্মী ভুল করে সংযোগ চালু করে দেন। এতে খুঁটির ওপরই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুলাল হোসেন মারা যান। পরে তাঁকে খুঁটির ওপর থেকে রশি দিয়ে বেঁধে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বেলপুকুর ইউনিয়নের কামার ধাদাস ওয়ার্ড সদস্য কুরবান আলী বলেন, ‘দুপুরে তাঁদের কাজ করতে দেখে আমি হাটে গেছি। হাট থেকে ফেরার পথে দেখি খুঁটির ওপর থেকে রশি দিয়ে মৃতদেহ নামানো হচ্ছে।’ তিনি জানান, দুলালের সহকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওই এলাকায় পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসের এক কর্মীকেও মারধর করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের পুঠিয়া কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নাসির উদ্দিন বলেন, নিয়ম অনুযায়ী তারা আনুষ্ঠানিকভাবে সংযোগ বন্ধ করেনি। সেটা করা হলে সংযোগ সুইচে একটা ‘ডেঞ্জার প্লেট’ ঝুলিয়ে রাখা হয়। কাজ শেষ হলে প্লেট নামানো হয়। তার পর সুইচ অন করা হয়।

নাসির উদ্দিন বলেন, তারা নিজেরাই ফিউজ খুলে সংযোগ বন্ধ করেছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করা হয়নি। এদিকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় এলাকাবাসী নিয়ন্ত্রণকক্ষে ফোন করে। এ সময় ‘ডেঞ্জার প্লেট’ না থাকায় ভুলবশত নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে সংযোগ চালু করে দেওয়া হয়। ডিজিএম বলেন, তাঁদের একজন এজিএম বেলপুকুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে যাবেন।

এ ব্যাপারে বেলপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তাফা জানান, মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানো হয় তবে আজ দুপুর পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান ওসি।