Thank you for trying Sticky AMP!!

ভ্যাপসা গরমেও ভরপুর উৎসব

খুলনার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে গতকাল এইচএসবিসি–প্রথম আলো ভাষা প্রতিযোগ উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন করে এক শিক্ষার্থী l ছবি: প্রথম আলো

সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। সঙ্গে ভ্যাপসা গরম। আটটাতেই তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ গরম উপেক্ষা করেই নয়টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থল পূর্ণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের পদচারণায়। উৎসবস্থল রূপ নিল এক মিলনমেলায়।

গতকাল শুক্রবার এইচএসবিসি-প্রথম আলো ভাষা প্রতিযোগ-২০১৭-এর খুলনা অঞ্চলের আসর বসেছিল খুলনার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে। আনন্দমুখর এই উৎসবে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

সকাল সোয়া নয়টায় করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লায়লা আরজুমান। ভাষা প্রতিযোগের পতাকা উত্তোলন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৌরভ সিকদার। পরে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।

প্রথমা প্রকাশনের ব্যবস্থাপক জাফর আহমদের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক লায়লা আরজুমান উপস্থিত প্রতিযোগীদের উদ্দেশে বলেন, ‘মা, মাতৃভূমি ও ভাষাকে ভালোবাসতে হবে। হতে হবে সুনাগরিক, ভালো মনের মানুষ। সুন্দর মনের মানুষ হয়ে তোমরা দেশকে এগিয়ে নেবে।’

উদ্বোধনের পর শিক্ষার্থীরা ৪০ মিনিটের মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষা শেষে ভাষা প্রতিযোগ ২০১৭-এর সহকারী সমন্বয়ক কুদরত-ই-হুদার সঞ্চালনায় শুরু হয় মজার প্রশ্নোত্তর পর্ব। বিশুদ্ধ বাংলা বলে কিছু আছে কি? আঞ্চলিক ভাষা কি অশুদ্ধ! বর্তমানে ঌ (লি) কারের ব্যবহার নেই কেন? চন্দ্রবিন্দু আলাদা বর্ণ হলেও কেন পরাশ্রয়ী। মূর্ধ-ন্য ও দন্ত্য-ন-এর মধ্যে উচ্চারণে পার্থক্য না থাকলেও এ দুটোকে আলাদা লেখা হয় কেন? ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে এ রকম বৈচিত্র্যময় প্রশ্ন উঠে আসে এ পর্বে।

শিক্ষার্থীদের কৌতূহলী নানা প্রশ্নের জবাব দেন অধ্যাপক সৌরভ সিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা ও সহকারী অধ্যাপক মামুন-অর-রশিদ। বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন করায় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বের মাঝে গিটারের ঝংকারে গান পরিবেশিত হয়।

উৎসবের প্রথম পর্বে দেওয়া বক্তব্যে এইচএসবিসি ব্যাংকের বাংলাদেশের ডেপুটি সিইও ও হেড অব কমার্শিয়াল ব্যাংকিং মো. ‘মাহবুব উর রহমান বলেন, ভাষার প্রতি মমত্ববোধ থেকেই এই প্রতিযোগের আয়োজন। প্রত্যাশা রাখি, এ উৎসব মমত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দেবে।’ দ্বিতীয় পর্বে খুলনা বন্ধুসভার বন্ধুরা পরিবেশন করে নাটিকা ক্যাচাল-২। পরে প্রধান শিক্ষক লায়লা আরজুমানের হাতে ভেন্যু স্মারক তুলে দেন প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ও ভাষা প্রতিযোগ ২০১৭-এর সমন্বয়ক অরুণ বসু।

প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক —এই চারটি বিভাগে ভাষা প্রতিযোগিতায় ৬০ জন শিক্ষার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁদের হাতে সনদ, পদক ও বই তুলে দেন অতিথিরা। বিজয়ী শিক্ষার্থীরা ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় উৎসবে অংশ নেবে। বিজয়ীদের মধ্যে সেরাদের সেরা হয় সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির সিরাজুল আরিফিন। বানান নিয়ে মজার বিশেষ প্রতিযোগিতায় ‘বানান বীর’ হয়েছে খুলনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির খন্দকার হুমায়রা ঐশী।

অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো খুলনা বন্ধুসভা।