Thank you for trying Sticky AMP!!

মহাজোটে জটিল সমীকরণ

আবু জাহির ও আতিকুর রহমান

হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ নিয়ে এই আসন গঠিত। এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে আছেন আওয়ামী লীগজাতীয় পার্টির (জাপা) সাতজন নেতা। তবে আওয়ামী লীগের নেতা আবু জাহির বা জাপার নেতা আতিকুর রহমান (আতিক)—এই দুজনের একজন মনোনয়ন পেতে পারেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, হবিগঞ্জ-৩ আসনের মহাজোট থেকে প্রার্থী দিলে আবু জাহিরকে দেওয়া উচিত। কারণ, আর কেউ মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেলে তাঁর পক্ষে আসনটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহির এই আসনে টানা দুইবারের সাংসদ। তাঁর অনুসারীদের দাবি, দুইবার সাংসদ থাকাকালে ১০ বছরে আবু জাহির এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যাতায়াত ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রেখেছেন। এ কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে তাঁকেই এবার মনোনয়ন দেওয়া উচিত।

সাংসদ আবু জাহির বলেন, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি সাংসদ হন। এই ১০ বছরে তিনি প্রতিশ্রুতি ও প্রত্যাশার বাইরেও অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন। শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বৃন্দাবন সরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু, শতভাগ বিদ্যুতায়নসহ অনেক উন্নয়নকাজ হয়েছে। এ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে হবিগঞ্জবাসী তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছে। তিনি বলেন, মহাজোটের মনোনয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবারের মতো এবারও বিভিন্ন জরিপ পরিচালনা করেছেন। অতীতে তৃণমূলের মানুষ এককভাবে তাঁর নাম সুপারিশ করেছে। এবার তিনিই মহাজোট থেকে প্রার্থী হচ্ছেন বলে আশাবাদী।

তবে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা আসনটি তাঁদের পাওয়ার পক্ষে নানা যুক্তি দেখাচ্ছেন। এ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা আবু লেইছ মো. মুবিন চৌধুরী। তা ছাড়া ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি জাপাকেই ছেড়ে দিয়েছিল মহাজোট। সেবার মহাজোটের প্রার্থী হয়েছিলেন জাপার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জেলা কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান।

আতিকুর ও তাঁর অনুসারীরা বলছেন, হবিগঞ্জের চারটি আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-৩ আসনটিই মহাজোটের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ আসন। কেন্দ্রও অবগত কী কারণে ঝুঁকিপূর্ণ। একমাত্র আতিকুর প্রার্থী হলেই আসনটি মহাজোটের দখলে থাকবে।

হবিগঞ্জ জেলা জাপার এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হবিগঞ্জ-৩ আসনের শেখ হাসিনার নানা জরিপের ফলাফল আওয়ামী লীগের অনুকূলে নয়। এ কারণে জাপার নেতা আতিকুরকেই মহাজোট থেকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।

আতিকুর রহমান বলেন, মনোনয়ন পাওয়াই বড় নয়, ভোটারের সমর্থন থাকতে হবে প্রার্থীর প্রতি। তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একে একে কেন্দ্র দখলের দৃশ্য দেখে তিনি বেলা ১১টার পর নির্বাচন থেকে সরে আসেন। তারপরও ২৫ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। তিনি বেশ আশাবাদী এবার মহাজোট তাঁকেই মনোনয়ন দেবে।

এ আসনে আরও মনোনয়ন চেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আবুল হাসেম মোল্লা (মাসুম), লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, আইনজীবী রুহুল আমিন ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সুশান্ত দাস।

হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ আলম বলেন, মহাজোটের প্রার্থী কে হচ্ছেন, এটা নিয়ে সবার আগ্রহ। সকালে শোনা যায় বর্তমান সাংসদ আবু জাহির বহাল থাকছেন। আবার বিকেলে শোনা যায়, জাপার নেতা আতিকুরের মনোনয়ন চূড়ান্ত। তবে যিনিই আসুন, তাঁকে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর কাছে।