Thank you for trying Sticky AMP!!

মানবেতর জীবনযাপন করছেন যাত্রাশিল্পীরা

বগুড়ার শেরপুরে যাত্রা ও নাট্য সংস্থার প্রায় ২০০ শিল্পী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হরতাল-অবরোধের কারণে আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের অনেকের পরিবারে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। পাশাপাশি যোগ হয়েছে পেট্রলবোমা আতঙ্ক। এ কারণে আয়োজক ও নাট্য সংস্থার মালিকেরা যাত্রাপালা ও নাটক মঞ্চস্থ করতে পারছেন না।
উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, শীত মৌসুমে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে এলাকায় যাত্রাপালা মঞ্চস্থ করা হয়। কিন্তু এবার হরতাল-অবরোধে পেট্রলবোমা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় লোকজন যাত্রাপালার আয়োজন থেকে বিরত রয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন নাট্য সংস্থার মালিক ও শিল্পীরাও আতঙ্কে রয়েছেন।
গত মঙ্গলবার কয়েকটি যাত্রা ও নাট্য সংস্থার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কার্যালয়ই তালাবদ্ধ। দুর্বার নাট্য সংস্থার কার্যালয়ে এক বছরের শিশুকে নিয়ে বসে ছিলেন অভিনয়শিল্পী জাকিয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘পেট্রলবোমা ও বিভিন্ন স্থানে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় বন্ধ হয়ে গেছে মঞ্চ নাটকসহ যাত্রাপালা ও বিচিত্রা অনুষ্ঠান। শীত মৌসুমে আয়ের একমাত্র পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোলের শিশুকেও দুধ কিনে খাওয়াতে পারছি না।’
আরেক অভিনয়শিল্পী লিপি বেগম বলেন, ‘আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘরের জিনিসপত্র বন্ধক রেখে কোনোমতে, জীবন বাঁচিয়ে রেখেছি।’ সাথী আক্তার বলেন, এভাবে চললে বন্ধক রাখার মতো কিছু থাকবে না। তখন পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।
নাসির অপেরা দলের মুন্নী খাতুন বলেন, শীতকালের আয়ের টাকায় সারা বছর চলতে হয়। বর্তমানে আয় বন্ধ থাকায় অনেক শিল্পীর বাড়িতে রান্নার চুলাও জ্বলছে না।
দুর্বার নাট্য সংস্থার মালিক সুনীল সরকার বলেন, শেরপুরে এমন ছয়টি সংস্থার অধীনে ২০০ শিল্পী রয়েছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে নাটক মঞ্চস্থ করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া সবার মধ্যে একটা আতঙ্কও বিরাজ করছে।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ হাশমী বলেন, মঞ্চের আয়োজক ও শিল্পীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। প্রতিবছরে এই উপজেলায় যেভাবে যাত্রা ও নাটকের মঞ্চস্থের আবেদন আসে এবার তা হয়নি।