Thank you for trying Sticky AMP!!

মিলাদে ফারাজকে স্মরণ

ফারাজ আইয়াজ হোসেন

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলায় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার ফারাজের নানা লতিফুর রহমানের বাসভবনে এই দোয়া মাহফিল হয়। ফারাজের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ট্রান্সকম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া পরিচালনা করেন নারিন্দার পীর শাহ সৈয়দ মুরাদুল্লাহ আহমেদ। তিনি বলেন, হোলি আর্টিজান বেকারিতে বন্ধুদের সঙ্গে খেতে যাওয়ার পর ফারাজ জঙ্গিদের হামলার শিকার হয়েছিলেন। তবে জঙ্গিরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিল তুমি সুরা জানো কি না। উত্তরে ফারাজ কোরআনের আয়াত শুনিয়ে দিলে জঙ্গিরা তাঁকে চলে যেতে বলে। কিন্তু ফারাজ তাঁর দুই বন্ধু অবিন্তা কবির ও তারিশি জৈনকে ছেড়ে যেতে রাজি হননি। এ কারণে তাঁকে জঙ্গিরা মেরে ফেলে। এ ধরনের মৃত্যু তাঁকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ফারাজের নানা ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান বলেন, ‘দেশে ও দেশের বাইরে ফারাজকে আজ স্মরণ করা হচ্ছে। তাঁর মূল্যবোধের জন্য যে সম্মান দিয়ে তাঁকে স্মরণ করা হচ্ছে, তার জন্য আমরা গর্বিত। এমন একটি ছেলে আমাদের পরিবারে জন্ম নিয়েছে, তার জন্য আমরা সবাই গর্বিত।’ তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব বিজনেস। মৃত্যুবরণ করার সময় ফারাজের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষাবর্ষ শেষ হওয়ার দুই বছর বাকি ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রবর্তন করেছে ‘ফারাজ হোসেন কোর ভ্যালু অ্যাওয়ার্ড’ও।

ফারাজের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন। গতকাল গুলশানে ফারাজের নানা লতিফুর রহমানের বাসভবনে। ছবি: প্রথম আলো

ফারাজের বড় ভাই যারেফ আয়াত হোসেন বলেন, ‘ফারাজকে আমরা সবাই ছোটু নামে ডাকতাম। সে যখন যুক্তরাষ্ট্রের ইমোরি
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তখন আমি টের পেলাম সে বড় হয়ে উঠেছে। আজকে সে আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু সে আবার আছেও।’ এ বছর গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ফারাজকে অভিনন্দন জানান যারেফ।

এদিকে সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লা, যশোর, বরিশাল, খুলনা ও নোয়াখালীতে ফারাজের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচিগুলোতে পয়লা জুলাইকে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া এসব জেলায় ফারাজের জন্য দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়।

সিরাজগঞ্জ ফারাজ আইয়াজ হোসেন স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে ফারাজের মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। তা শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রথম আলো কার্যালয়ে একটি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তির সোপান মোমবাতি প্রজ্বালন করেন জেলা নজরুল একাডেমির সভাপতি হেলাল আহমেদ।