Thank you for trying Sticky AMP!!

মুক্তাগাছায় অবৈধ মেলায় অতিষ্ঠ লোকজন

মুক্তাগাছায় মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার প্রধান ফটক। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহে মুক্তাগাছা উপজেলা সদরের মনিরামবাড়ি এলাকায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী পল্লিশিল্প ও বাণিজ্য মেলা। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই মেলার কোনো বৈধতা নেই। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকেও নেওয়া হয়নি কোনো অনুমোদন। তবু রহস্যজনকভাবে প্রতিদিনই মেলা জমজমাটভাবে চলছে।

১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মেলায় উচ্চ শব্দে মাইক বাজানোয় এবং পৌর এলাকায় মাইকিং করায় বার্ষিক পরীক্ষা মৌসুমে মেলার আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষজন।

গত সোমবার সন্ধ্যায় মুক্তাগাছা পৌর এলাকার মনিরামপুর খেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, আলোকসজ্জা ও উচ্চ শব্দে বিভিন্ন হিন্দি গানের মাধ্যমে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে। মেলার মূল ফটকের দুই পাশে দুটি টিকিট কাউন্টার। ১০ টাকার বিনিময়ে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকতে হয়।

ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায়, একটি পানির ফোয়ারা এবং সুউচ্চ একটি আলোক ঝলমলে ওয়াচ টাওয়ার। মেলার আয়োজন ব্যাপক জমজমাট। মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে প্রায় ৪০টি ছোট–বড় স্টল। এ ছাড়া রয়েছে সার্কাস, ট্রেন, হোন্ডা গেম, নাগরদোলা, নৌকা, গেম জোন ও খাবারের দোকান। রাইডগুলোতে শিশুদের আধিক্যই বেশি। স্টলগুলোতে বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন বিক্রেতা।

মেলার আয়োজকদের কেউকে মেলা প্রাঙ্গণে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ রয়েছে মুক্তাগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল সরকার এই মেলার মূল আয়োজক। তাঁর সঙ্গে সহযোগিতায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা। তবে বিল্লাল সরকার দাবি করেন, এই মেলার সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি মেলায় এখন পর্যন্ত যাননি।

মেলার উদ্বোধন করেছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ কে এম খালিদ। মেলা আয়োজনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী লোকজন রয়েছেন। এ কারণে মেলার আয়োজনের বৈধতা নিয়ে এবং অন্য সমস্যা নিয়ে মুক্তাগাছা পৌর এলাকার কেউ প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এই মেলা আয়োজনের ফলে তাঁদের বিক্রির পরিমাণ আগের চেয়ে বেশ কমে গেছে। এর বেশি তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আর মেলার পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীখোলা ও লাঙ্গলিয়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, অনেক শিক্ষার্থীই আছে, যাদের সামনে এসএসসি পরীক্ষা। মেলায় দিনরাত উচ্চ শব্দে মাইক বাজানোয় তাদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই মেলা বন্ধের জোর দাবি জানান তাঁরা।

প্রশাসনের পাশাপাশি বাণিজ্য মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও মনিরামবাড়ি মেলা কমিটি সেই নিয়ম মানেনি। তাই সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি শঙ্কর সাহা বলেন, তাঁরা এই অবৈধ মেলা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন।

মেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা সরকার বলেন, তিনি এখনো জেলা প্রশাসন থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি। নির্দেশনা পাওয়ামাত্র ব্যবস্থা নেবেন।

জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, তিনি মেলা কমিটিকে মেলা বন্ধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরও যদি নির্দেশ না মানা হয় তাহলে শিগগিরই তা উচ্ছেদ করা হবে।