Thank you for trying Sticky AMP!!

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান সোহাগপুরের বিধবারা

সোহাগপুরের বিধবাপল্লির বাসিন্দা করফুলি বেগম l ছবি: প্রথম আলো

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুরে গণহত্যা চলাকালে নির্যাতনের শিকার পাঁচ বিধবা নারী। কারণ, এই স্বীকৃতি পেলে মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা দিয়ে তাঁরা তাঁদের চিকিৎসা করাতে পারতেন। টাকার অভাবে এখন তাঁরা চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

সোহাগপুর গ্রামের বাসিন্দা বিধবা করফুলি বেগম (৭৫) বলেন, ‘এক মাস ধইরা অসুস্থ। ঠিকমতো চলবার পাই না। সারা সইল (শরীর) খিঁচে। সইলে সব সমু জ্বর থাহে। কোন কিছু খাইবার পাই না। ডান পাওডা আগুনের মতো জ্বলে। আমরা সরকারের কাছে বিচার পাইছি। জীবদ্দশায় যদি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিডা পাইতাম। তাইলে মরণের আগে একটু তৃপ্তি লইয়া মরবার পাইতাম।’

সোহাগপুর শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতি ও নির্যাতনের শিকার নারীদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রামের ১৮৭ জনকে হত্যা করে। এতে ৬২ জন নারী বিধবা হন। বর্তমানে বেঁচে আছেন ২৯ জন। তাঁদের মধ্যে অনেককে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা নির্যাতন করেছে। গত বছর সরকার তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। করফুলিসহ বাকি নারীরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় গত মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।

নির্যাতনের শিকার নারীদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ভাতা হিসেবে একজন নারী প্রতি মাসে ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ২ হাজার টাকা, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক থেকে ৪০০ ও বিধবা ভাতা হিসেবে ৫০০ টাকা করে পাচ্ছেন। এতে তাঁদের দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা হলেও চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য থাকে না।

করফুলি বেগমের ছেলে কফিল উদ্দিন বলেন, ‘মাকে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তরের কাছে নিয়া গেছিলাম। টাকার অভাবে বড় কোন ডাক্তরের কাছে নিতে পারি নাই। গত মার্চ মাসে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য আবেদন করছি। এখন যাচাই-বাছাই চলছে। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলে মাকে বড় কোনো ডাক্তর দেখাতে পারমু।’

সোহাগপুর শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘সোহাগপুরের গণহত্যায় ১৪ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলে আমরা জানি। ছয়জনকে ইতিমধ্যে সরকার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনজন মারা গেছেন। বাকি পাঁচজন বেঁচে আছেন। এ ছাড়া মরণোত্তরসহ আরও সাতজন নারী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। আজ (গতকাল) রোববার থেকে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে।’