Thank you for trying Sticky AMP!!

মোটর চালিয়েও পানি আসছে না

গভীর রাতেও রাজধানীর অনেক জায়গায় লোকজনকে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায়। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

রোববার সকাল থেকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা এক ফোঁটা পানিও আসেনি। গতকাল সোমবার কিছু সময়ের জন্য পানি এলেও তাতে ছিল গন্ধ। পানি সংকটের এই চিত্রটা রাজধানীর কাঁঠালবাগানের ঢাল এলাকার। সেখানে রয়েছে ওয়াসার প্রায় তিন শ বৈধ গ্রাহক।
কাঁঠালবাগান বাজারের কাছে থাকতেন একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাপস রঞ্জন। সম্প্রতি তিনি অন্যত্র বাসা নিয়ে চলে গেছেন। জানালেন, বাসা পরির্বতনের একটি বড় কারণ হচ্ছে এই এলাকার পানির সমস্যা।
১৫ দিন ধরে এলাকায় পানির সমস্যায় ভোগার কথা বললেন আবদুল হাদী। তিনি ২৪৩/২ ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের বাসিন্দা।
কী কারণে পানির এই সমস্যা—জানতে ঢাকা ওয়াসার স্থানীয় পাম্প স্টেশনে গিয়েছিলেন ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের বাসিন্দা আকমল হোসেন। সেখানে কর্মরত একজন কর্মী কারণ সম্পর্কে কিছু না জানিয়ে তাঁকে বুদ্ধি দেন, বাসায় পানির লাইনে আলাদা মোটর লাগিয়ে নিতে। অন্য ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে নিয়ে বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন আকমল হোসেন। সবার কাছ থেকে নেওয়া হয় টাকা, যা ভাড়ার সঙ্গে মাসে মাসে সমন্বয় করা হবে। কেনা হয় মোটর। কিন্তু গত কয়েক দিন কাজ হলেও এখন ওই আলাদা মোটর দিয়েও পানি আসছে না।
কারণ জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ) এ বি এম কামরুল আলম বলেন, ভূতের গলি এলাকার গভীর নলকূপ থেকে প্রতি মিনিটে ৩ হাজার ৩০০ লিটার পানি উত্তোলন করা যেত। কিন্তু কয়েক দিন ধরে প্রায় ২ হাজার লিটার কম উৎপাদন হচ্ছে। এ জন্য পাশ্ববর্তী কাঁঠালবাগান, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এলাকায় পানি সরবরাহ কম হচ্ছে। এ ছাড়া গত রোববার ওই গভীর নলকূপটি সংরক্ষণে রাখা হয়েছিল। তিনি আশা করেন, দু-এক দিনের মধ্যে সংকট কমে আসবে।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের কয়েকটি সড়কে, ইব্রাহিমপুর, পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার বাসাবো, কদমতলা, গোড়ান আদর্শবাগ, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, গোপীবাগ, পেয়াদাপাড়া, অভয় দাস লেন, কে এম দাস লেন প্রভৃতি এলাকায় পানি সংকট চলছে। এর মধ্যে অনেক স্থানেই ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে দুর্গন্ধের অভিযোগ করা হচ্ছে। ১৬৪/২ নম্বর রামকৃষ্ণ রোডের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ জানান, পানির কারণে তাঁর পরিবারের সদস্যদের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে তিনি চিন্তিত। একই এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় চন্দ জানান, নিয়মিত পানির বিল দিলেও প্রতিদিন বাইরে থেকে পানি কিনতে হয়। রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বালুর মাঠ, বাসাবো পাম্প স্টেশনে গভীর রাতেও অনেককে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
ওয়াসা সূত্র জানায়, শীতলক্ষ্যা নদীর পানি শোধনের অযোগ্য হয়ে যাওয়ায় ওয়াসা কয়েক দিন ধরে কম পানি উৎপাদন করছে। সেখানে দুটি শোধনাগার থেকে ৪৫ কোটি লিটার পানি উত্তোলন সম্ভব হলেও তা প্রায় ১০ কোটি লিটার কমে এসেছে। এ ছাড়া ওয়াসার মোট ৬৮৬টি গভীর নলকূপের মধ্যে অন্তত ১০০টির উত্তোলনক্ষমতা কমে এসেছে।