Thank you for trying Sticky AMP!!

যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক কলেজ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক কলেজ পরিদর্শক ও যশোর সরকারি সিটি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অবৈধভাবে ৬০ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলাটি যশোর জেলা ও দায়রা জজ মো. ইখতিয়ারুল ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

গতকাল বুধবার যশোর দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম মোড়ল বাদী হয়ে এ মামলা করেন। অভিযুক্ত অমল কুমার বিশ্বাস যশোরের চৌগাছা উপজেলার কংশারীপুর গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, অমল কুমার বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী বীথিকা শিকদারের দাখিল করা সম্পদের হিসাব বিবরণী যাচাই করে দেখা গেছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৬০ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৬ টাকার সম্পদ তাঁরা অর্জন করেছেন। যে কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলা যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলা আমলে নিয়েছেন বিচারক।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের অনুসন্ধানসংক্রান্ত সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় অমল কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মেলে এবং তাঁর স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জনের কারণে তাঁদের প্রতি সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি করা হয়। এরপর জারি করা নোটিশের আলোকে সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণ করে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর দুদকে জমা দেন অমল বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী বীথিকা শিকদার। সেই বিবরণীতে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ কারণে গতকাল বুধবার দুদক মামলা করে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অধ্যাপক অমল বিশ্বাস দুর্নীতি দমন কমিশনে তাঁর নিজ নামে ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ৮০০ টাকার স্থাবর ও ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪১৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। স্থাবর–অস্থাবর মিলিয়ে যার পরিমাণ দাঁড়ায় মোট ৭৮ লাখ ১১ হাজার ২১৪ টাকা। এ ছাড়া অমল বিশ্বাসের ওপর নির্ভরশীল তাঁর স্ত্রী বীথিকা শিকদারের নামে ৯১ লাখ ৫ হাজার টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁদের দুজনের মোট ১ কোটি ৬৯ লাখ ১৬ হাজার ৪৪৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে বীথিকা সিকদার তাঁর বাবার কাছ থেকে দান হিসেবে পেয়েছেন পাঁচ লাখ টাকার সম্পদ।

দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, অমল কুমার বিশ্বাস তাঁর কর্মজীবনের ভিত্তি অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত পারিবারিক, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বিদেশ ভ্রমণ খাতে মোট ব্যয় করেছেন ৫৮ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮১ টাকা। তাঁর স্ত্রী বীথিকা শিকদার একজন গৃহিণী। সে হিসাবে খরচসহ অমল কুমার বিশ্বাসের আয় দাঁড়ায় ২ কোটি ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৫ টাকা। কিন্তু তাঁর বৈধ আয়ের পরিমাণ ১ কোটি ৬৭ লাখ ২১ হাজার ২৭৯ টাকা। হিসাব অনুযায়ী, তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৬০ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৬ টাকা। অর্থাৎ অধ্যাপক অমল বিশ্বাসের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে ৬০ লাখ ৩৬ হাজার ১৪৬ টাকার আয়ের অসংগতি রয়েছে; যা তিনি তাঁর স্ত্রীর মাধ্যমে স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন এবং তা ভোগদখলে রেখেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে তিনি অপরাধ করেছেন। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।