Thank you for trying Sticky AMP!!

যেখানে ইচ্ছা রাখলাম গাড়ি

মতিঝিলের সিটি সেন্টারের সামনে সিটি করপোরেশনের বিজ্ঞপ্তির সামনে অবৈধ পার্কিং। ছবি: লুৎফরজামান

প্রথম দেখায় মনে হতে পারে বাসস্ট্যান্ড। দুই সারিতে বাস রাখা। বাসের কারণে মূল রাস্তা গলিতে রূপ নিয়েছে। এর একটু সামনে গেলেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পার্কিং-বিষয়ক একটি বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে। এই বিজ্ঞপ্তির সামনেই আবার অবৈধভাবে গাড়ি রাখা। দৃশ্যটি মতিঝিলের হলেও গোটা ঢাকা শহরের অন্তত সাতটি এলাকার চিত্র একই রকম দেখা গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিল, ধানমন্ডি, শ্যামলীসহ অন্তত সাতটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও রাস্তা দখল করে ‘রেন্ট-এ কার’ গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা খুলে বসেছেন স্থানীয় লোকজন। কেউ কেউ হাতের কাছেই পার্কিং রেখেও রাস্তার ওপর গাড়ি রেখেছেন। এ ছাড়া রাস্তার ওপর লেগুনাস্ট্যান্ড ও বাসস্ট্যান্ডও দেখা গেছে।

মতিঝিল সিটি সেন্টারের সামনে একজন সচিবের গাড়িচালক মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে কথা হলো। রাস্তায় গাড়ি রেখে গাড়ির ভেতর শুয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, এই এলাকায় তাঁর খুব বেশি আসা হয় না। এখানে পার্কিং কোথায়, তিনি জানেন না। কিছুক্ষণের মধ্যে চলে যাবেন বলে গাড়ি এখানে রেখেছেন।

মোহাম্মদ হোসেন নিয়মিত আসেন কি না, সেটা জানা যায়নি। তবে মতিঝিলের এই রাস্তায় অবৈধ পার্কিং নিয়মিত ব্যাপার। এই একই রাস্তায় দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের স্টাফ বাসের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। এই বাসগুলোর এখানে দাঁড়ানোর কথা বিকেল সাড়ে চারটায়, অফিস শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টা আগে। অন্য সময়ে মতিঝিলের অন্যান্য কম ব্যস্ত ছোট সড়ক বা গলিতে এসব বাস থাকার কথা। অথচ এই বাসগুলো বেলা তিনটা থেকেই রাস্তা দখল করে রাখে। এ কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

মতিঝিল ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার সরোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জনতা ব্যাংকের দিকে রাস্তায় সিটি করপোরেশনের বৈধ পার্কিং আছে। এ ছাড়া অফিসের বাসগুলোর দাঁড়ানোর নির্দিষ্ট সময় আছে। তার আগে দাঁড়ালে তাদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যক্তিগত যেসব গাড়ি রাস্তায় পার্ক করা হয়, সেসবের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ধানমন্ডির সাতমসজিদ রাস্তায় গাড়িভাড়ার ব্যবসা চলছে রাস্তা দখল করে। আবদুর রহমান নামের এক গাড়িচালক বললেন, এখানে অনেক মালিকের গাড়ি আছে। নিয়মিত এখানে তাঁরা গাড়ি রাখেন। এ রাস্তা বড় হওয়ার কারণে অন্য গাড়ি চলাচলে খুব বেশি সমস্যা হয় না বলে তিনি মনে করেন।

সাতমসজিদের এই রাস্তা ধরে জিগাতলার দিকে গেলেও অনেক জায়গায় অবৈধ পার্কিং চোখে পড়ে। এসব গাড়ির সবই ব্যক্তিগত গাড়ি। তা ছাড়া এ রাস্তায় যত্রতত্র রিকশা রাখার কারণেও যানজট সৃষ্টি হয়।

ধানমন্ডির বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, রাস্তায় গাড়ি রাখা এখন একটা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে দুই দিন থাকে না, তারপর ঘুরেফিরে একই চিত্র।

এ বিষয়ে ধানমন্ডি ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার আকরাম হাসান বলেন, অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাস্তা দখল করে কেউ যদি গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা করেন, তাহলে সেটা অন্যায় হবে। কালই ওই এলাকায় অভিযান চালানো হবে।

ধানমন্ডি থেকে মোহাম্মদপুর হয়ে রিংরোড, তারপর শ্যামলী—গোটা এলাকায় কমবেশি অবৈধ গাড়ি পার্কিং চোখে পড়ে। এরপর কল্যাণপুরে বাসস্ট্যান্ড বলে কিছু দেখা গেল না। সন্ধ্যার একটু আগে থেকে এই এলাকা পুরোটিই বাসস্ট্যান্ড হয়ে যায়।