Thank you for trying Sticky AMP!!

রাস্তায় বালু ফেলা নিয়ে হামলার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাস্তায় বালু ফেলা নিয়ে এক সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতার ছেলেদের বিরুদ্ধে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জেলা শহরের মধ্যপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রাতে পরিবারটির আহত সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁরা হলেন পীযূষ মল্লিক (৪৮), তাঁর স্ত্রী রিতা রানী মল্লিক (৩৭), ছেলে প্রাঞ্জন মল্লিক (৯) ও কাজের বুয়া পুষ্প রানী (২৭)। পুষ্প রানী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে রাত আটটার দিকে হাসপাতাল ছাড়েন।

পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলিম মিয়া পরিবার নিয়ে জেলা শহরের মধ্যপাড়ায় বাস করেন। তাঁর বাড়ির পশ্চিম দিকে প্রয়াত দেবেন্দ্র মল্লিকের তিন ছেলে রতন মল্লিক, অঞ্জন মল্লিক ও পীযূষ মল্লিকের ৭ শতক জমি রয়েছে। এক বছর আগে তাঁরা সেখানে চারতলা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে পীযূষ মল্লিক পরিবার নিয়ে একই এলাকার একটি বাড়ির নিচতলায় বাসা ভাড়া নেন। তিনি সোমবার রাতে এক ট্রাক বালু আনেন। মুসলিম মিয়ার বাড়ির সামনের পুকুরের উত্তরে এবং বাড়ির সামনের রাস্তার দক্ষিণ দিকে ওই বালু রাখেন। সেখানে বালু রাখতে ট্রাকচালককে বাধা দেন মুসলিম মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া। এ নিয়ে পীযূষের সঙ্গে সুমনের কথা–কাটাকাটি হয়। সুমন একপর্যায়ে পীযূষকে কিল–ঘুষি মারেন। মার খেয়ে তিনি বাসায় চলে যান। ওই ঘটনার ২০-২৫ মিনিট পর মুসলিম সুমন মিয়া, তাঁর ভাই মামুন মিয়া ও তাঁদের স্বজন সদর উপজেলার নাটাই গ্রামের কামাল মিয়াসহ ২০-২৫ জন পীযূষের বাসায় যান। তাঁরা বাসার ফটকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। তাঁরা পীযূষের ঘরের একটি জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। ভেতরে ঢুকে তাঁরা পীযূষের ঘরের দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা দরজা ভেঙে পীযূষকে ওই ঘর টেনেহিঁচড়ে বের করে আনেন। তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। কাজের বুয়া পুষ্পকে রড দিয়ে পেটানো হয়। পীযূষকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী রিতা রানী ও ছেলে প্রাঞ্জন মল্লিককে মারধর করেন তাঁরা। পরে তাঁরা পীযূষের পকেট থেকে টাকা এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে ও ঘরের আসবাব তছনছ করে চলে যান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মামুন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বালু ফেলা নিয়ে তাঁর ভাই সুমনের সঙ্গে পীযূষের কথা–কাটাকাটি হয়। তখন সুমনকে গালাগাল করেন পীযূষ। এ ছাড়া লাঠি নিয়ে মারতে তেড়ে আসেন। এতে রাগান্বিত হয়ে পীযূষকে কয়েকটি চড়থাপ্পড় মেরেছিলেন সুমন। বাড়িতে গিয়ে মারধরের অভিযোগ সত্য নয়, দাবি করে মামুন বলেন, ‘বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে আমি সঙ্গে দুই-তিনজনকে নিয়ে পীযূষের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমার সঙ্গে থাকা একজনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এক নারী ঘরের ভেতরে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছেন। আমরা কাউকে মারধর করিনি।’

তবে স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা পীযূষ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধরের প্রত্যক্ষদর্শী। তাঁদের একজন পীযূষের বাসার তৃতীয় তলায় বসবাসকারী আইনজীবী মো. আজিজ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘শব্দ শুনে আমি নিচে যায়। সেখানে পীযূষ ও তাঁর স্ত্রীকে মারধর করতে দেখেছি। পীযূষের রক্ষায় এগিয়ে গেলে আমার গায়েও কিল–ঘুষি পড়েছে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।