Thank you for trying Sticky AMP!!

রেলপথের ওপর দিয়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ

পাটগ্রাম রেলস্টেশন থেকে বুড়িমারীর দিকে ১০ কিলোমিটার ও লালমনিরহাটের দিকে ৫ কিলোমিটার এলাকা গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরেছেন এই প্রতিবেদক। এসব এলাকায় রেলপথের ওপর দিয়ে অন্তত ১১০টি স্থানে বাঁশের খুঁটি বসিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোথাও রেললাইনের পূর্ব দিকের গ্রামে বিদ্যুৎ আছে, পশ্চিমের গ্রামে নেই। কোথাও আবার উল্টোটা। ফলে একদিকের গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ নিয়ে সব কাজ করতে পারলেও রেললাইনের অপর পারে থাকা গ্রামগুলো অন্ধকারে থাকে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে অনেকে অপর পারের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বাঁশ ব্যবহার করে তাঁদের দিকে সংযোগ টেনে এনেছেন। অবৈধ এ সংযোগ আনা হয়েছে রেলপথের ওপর দিয়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গ্রামের বাড়িঘরে বাতি ও ফ্যান চালানোর জন্য সংযোগ নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও সংযোগ নিয়ে বৈদ্যুতিক সেচপাম্প চালানো হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটি দিয়ে টানা ওই বিদ্যুতের তারের নিচে সুরক্ষামূলক কোনো জাল নেই। ফলে যেকোনো সময় বাঁশের খুঁটি ভেঙে বা তার ছিঁড়ে ট্রেনের ওপর পড়তে পারে। এর ভেতর দিয়েই ট্রেন চলাচল করছে।

পাটগ্রাম পৌরসভার মির্জারকোট ও বুড়িমারী ইউনিয়নের গুড়িয়াটারি গ্রামের চারজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁদের বাড়ির সামনের রেলপথ পার হলেই ওপারে বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। এপারে একটি খুঁটি বসালেই তাঁরা বৈধভাবে বিদ্যুৎ পেতে পারেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। ফলে এখন মানুষ এই অবৈধ পথে বিদ্যুৎ নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই বিদ্যুতের কারণেই এখন লোকজন মাঠে কম খরচে সেচ দিতে পারছেন। আবার গ্রামগুলো আলোকিত হয়েছে। শক্ত বাঁশের খুঁটি বসানোয় ট্রেন চলাচলে কোনো অসুবিধা হবে না বলে দাবি করেন তাঁরা।

মির্জারকোট ও গুড়িয়াটারির পাশাপাশি পাটগ্রাম ইউনিয়নের খানপাড়া, বুড়িমারী ইউনিয়নের বেলতলী, ঘুমটিঘর ও তেলিপাড়া গ্রাম এলাকাতেও একই দৃশ্য চোখে পড়েছে।  স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য একটাই, বিদ্যুৎ পাওয়া তাঁদের অধিকার। তাঁরা বৈধভাবেই সংযোগ নিতে চান। কিন্তু ছয়-সাত বছর ধরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) স্থানীয় কার্যালয়, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ অনেকের কাছে ধরনা দিলেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। অথচ বৈদ্যুতিক খুঁটি বসিয়ে রেলপথের ওপর দিয়ে একটি তার টানলেই তাঁদের গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব।

পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোকলেছুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা দীর্ঘদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে আসছেন। ওই এলাকার এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা প্রয়োজন। এ জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে পিডিবির স্থানীয় কার্যালয়কে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

পিডিবি পাটগ্রামের আবাসিক নির্বাহী প্রকৌশলী (বিতরণ) আবদুল মতিন বলেন, ‘আমি এখানে যোগদান করার অনেক আগেই এই সংযোগ দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্পের মাধ্যমে খুঁটি ও তারের জন্য সুপারিশ করেছি। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই দ্রুত খুঁটি স্থাপন করা হবে।’