Thank you for trying Sticky AMP!!

রেলস্টেশনে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

পাবনার চাটমোহর রেলস্টেশনে কোনো পদচারী–সেতু না থাকায় মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হতে হয়। ছবিটি সম্প্রতি তোলা l প্রথম আলো

স্টেশনের দিকে ধেয়ে আসছে ট্রেন। পরোয়া নেই কারও। দ্রুতগামী ট্রেনের সামনে দিয়েই দৌড়ে রেললাইন পার হচ্ছে লোকজন। স্টেশনে ট্রেন থামলে বিড়ম্বনা বাড়ছে আরও কয়েক গুণ। কারণ, স্টেশনে ট্রেন থাকা অবস্থায় ট্রেনের ভেতর ও নিচ দিয়ে স্টেশনের দুই পাশে যাতায়াত করছে মানুষ।

পাবনার চাটমোহর রেলস্টেশনে এই চিত্র প্রতিদিনের। এক পাশে স্টেশন, অন্য পাশে বাজার। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে রেললাইন। ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষকে। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। ফলে ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে স্টেশনে একটি পদচারী-সেতু (ফুটওভারব্রিজ) তৈরির দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন ও স্টেশনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই স্টেশন হয়ে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫টি আন্তনগর এক্সপ্রেস ও ২টি লোকাল ট্রেন ঢাকাসহ দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে যাওয়া-আসা করে। স্টেশনটি ব্যবহার করে পাবনা জেলা সদর, চাটমোহর, আটঘরিয়া ও সুজানগর উপজেলার কয়েক শ গ্রামের মানুষ। ফলে স্টেশনে সব সময় ভিড় লেগেই থাকে। স্টেশনের বিপরীত দিকে একটি বড় বাজার ও একটি বড় হাট রয়েছে। এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে একটি ব্যাংক, দুটি স্কুল, একটি কলেজ, সরকারি খাদ্যগুদাম, কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার কার্যালয়। ফলে স্টেশনের দিক থেকে এসব প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করা কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন সহজ রাস্তা হিসেবে স্টেশনের রেললাইন পার হয়ে যাতায়াত করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জু ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ট্রেনের যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার স্টেশনে একটি পদচারী-সেতু তৈরির দাবি জানানো হয়েছে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল অব্যাহত রয়েছে।

চাটমোহর রেলবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদ বলেন, ‘জনগণের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা স্টেশনে একটি ওভারব্রিজ তৈরির দাবি জানাচ্ছি।’

সম্প্রতি এক সকালে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী লাবণী রহমান বলেন, ‘প্রায়ই এই স্টেশন দিয়ে চলাচল করি। পারাপারের জন্য মানুষ যেভাবে ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ায়, দেখে গা ছমছম করে।’

জেলা সদর থেকে আসা স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা যাত্রী রাজিউর রহমান বলেন, ‘সারা দেশে রেলের উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু চাটমোহর স্টেশনে হচ্ছে না। স্টেশনের গুরুত্ব বিবেচনায় এখানে একটি ওভারব্রিজ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় যা দেখছি, তাতে বড় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।’

মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে বিষয়টি স্থানীয় সাংসদসহ বিভিন্ন মহলকে অবহিত করেছি। সবাই স্টেশনে একটি ওভারব্রিজ করার জন্য আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কেন যে ওভারব্রিজটি হচ্ছে না বুঝে উঠতে পারছি না।’

জানতে চাইলে চাটমোহর রেলওয়ে স্টেশনের ইনচার্জ মাসুম আলী খান বলেন, ‘আমরা স্টেশনের পক্ষ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। ওভারব্রিজ নির্মাণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সে অনুমোদনের চেষ্টা করছে বলে জেনেছি। আশা করছি, দ্রুত স্টেশনে একটি ওভারব্রিজ হবে।’