Thank you for trying Sticky AMP!!

আন্তরিক উদ্যোগটির অপব্যাখ্যা করবেন না: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি ভাসানচরে পা রাখার পর তাদের আবাসস্থলে নেওয়া হয়। নোয়াখালীর হাতিয়ায় শুক্রবার

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশের আন্তরিক উদ্যোগকে ক্ষতিগ্রস্ত বা অপব্যাখ্যা না করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সরকার।

শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে। এতে মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, কক্সবাজারের জনবহুল শিবিরে চাপ কমাতে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ভাসানচরে স্থানান্তর জরুরি হয়ে পড়েছিল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরতে হবে। এ দেশে অস্থায়ী ভিত্তিতে আশ্রিত মিয়ানমারের এই নাগরিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকার নিজের সাধ্যমতো সবটুকু করছে।

রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি মিয়ানমারে দ্রুত, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে উদ্যোগী হওয়ার মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান হলো তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন। কাজেই এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের সঙ্গে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব নিয়ে ও অর্থপূর্ণভাবে কাজ করাই হবে বাস্তবিক উদ্যোগ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ১৩ হাজার একর আয়তনের ভাসানচর দ্বীপে আধুনিক সুযোগ–সুবিধা, বছরব্যাপী সুপেয় পানি পাওয়ার সুযোগ এবং যথাযথ অবকাঠামো রয়েছে। এ ছাড়া এই দ্বীপ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে টিকে থাকতেও সক্ষম।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির অত্যন্ত জনাকীর্ণ হয়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে এবং ভূমিধসসহ যেকোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি এড়াতে সরকার কয়েক দফায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় স্থানান্তরে রাজি হওয়ায় তাদের গতকাল শুক্রবার ভাসানচরে নেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিবছর হাজারের বেশি শিশুর জন্ম হচ্ছে। ফলে দিনে দিনে শিবিরে জনঘনত্ব আরও বাড়ছে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে শিবিরে আশ্রিত থাকায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশাও বাড়ছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয়েছে। সরকার ভাসানচরকে বাসযোগ্য করতে ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ১৩ হাজার একর আয়তনের ভাসানচর দ্বীপে আধুনিক সুযোগ–সুবিধা, বছরব্যাপী সুপেয় পানি পাওয়ার সুযোগ এবং যথাযথ অবকাঠামো রয়েছে। এসব সুযোগ–সুবিধার মধ্যে রয়েছে নির্বিঘ্ন বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ, কৃষিজমি, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, দুটি হাসপাতাল, চারটি কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, ওয়্যারহাউস, টেলিযোগাযোগ সেবা, পুলিশ থানা, বিনোদন ও শিক্ষাকেন্দ্র, খেলার মাঠ ইত্যাদি। এ ছাড়া এই দ্বীপ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে টিকে থাকতেও সক্ষম। বিবৃতিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভাসানচরের অবকাঠামোর শক্তি প্রমাণিত হয়েছে।