Thank you for trying Sticky AMP!!

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ দেওয়ার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র

অ্যান রিচার্ড। ছবি: প্রথম আলো

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অ্যান রিচার্ড বলেছেন, মিয়ানমারের দায়িত্ব অন্য দেশে আশ্রয় নেওয়া তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মিয়ানমারের ওপর চাপ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
আজ শুক্রবার বিকেলে মার্কিন এ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রাজধানীর আমেরিকান ক্লাবে গণমাধ্যমের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানের বিষয়ে এ মন্তব্য করেন। চার দিনের বাংলাদেশ সফর শেষ করার আগে অ্যান রিচার্ড গণমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
বাংলাদেশ সফরের আগে তিনি মিয়ানমার সফর করেন। ওই সফরের সময় তিনি সেখানকার সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কথা বলেন। এ ছাড়া তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সর্বশেষ অবস্থা বুঝতে রাখাইন প্রদেশ সফর করেন। আর চার দিনের বাংলাদেশ সফরে তিনি সরকারি কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ও অস্থায়ী ছাউনি ঘুরে দেখেন।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে এসে মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও অস্থায়ী ছাউনি পরিদর্শনের পর বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। অ্যান রিচার্ড বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশ যে উদার ভূমিকা রাখছে, তা বিশ্বের যেকোনো দেশের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে। টেকনাফ সফরের সময় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেও বাংলাদেশের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতার বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন বলে জানান।

রাখাইন প্রদেশ ও কক্সবাজার সফরের পর রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার সমাধানের উপায় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে অ্যান রিচার্ড বলেন, ‘রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতির সমাধান করতে হলে মিয়ানমারের ওপর আমাদের দেশের সরকারের মতো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ দিতে হবে। ’ তিনি মনে করেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি এমন আচরণ হওয়া উচিত, যাতে তারা মাতৃভূমিতে নির্ভয়ে ফিরে যেতে পারে। তবে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়া এসব লোকজনের একটি ক্ষুদ্র অংশ এত নির্মমভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই মিয়ানমার ফিরবে না। তাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন করাটা যথার্থ।
তবে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনকেই সমাধানের চূড়ান্ত উপায় হিসেবে মানতে রাজি নন মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুনর্বাসনের বিষয়টি অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সমাধানের উপায় নয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান।

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দেখার পর অ্যান রিচার্ড মনে করেন, বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করলেও রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কারণ তারা বাংলাদেশে কিছুটা হলে স্বাধীনতা ভোগ করে। অ্যান রিচার্ড বলেন, ‘আমাদের স্বপ্ন, রোহিঙ্গারা রাখাইন প্রদেশে নিজেদের প্রতিবেশীদের নিয়ে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ পাবে। ’

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অ্যান রিচার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সাহায্য সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে তাদের প্রত্যয় প্রশংসার দাবি করে। কাজেই তাদের কাজে লাগানোর বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে।