Thank you for trying Sticky AMP!!

লতিফের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে বিক্ষোভ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃত করার অভিযোগে চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ এম এ লতিফের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে আজ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ তরুণেরা সাংসদের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করেন। ছবিটি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে তোলা। ছবি: সৌরভ দাশ

চট্টগ্রাম-১১ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ এম এ লতিফকে ‘পাকিস্তানের প্রেতাত্মা’ অভিহিত করে তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বিক্ষুব্ধ একদল যুবক।
আজ বুধবার বেলা সোয়া তিনটায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ‘জাগ্রত ছাত্র, যুব ও জনতার’ ব্যানারে কার্যত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা এম এ লতিফের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের (বন্দর, হালিশহর ও পতেঙ্গা) সাংসদ এম এ লতিফের বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শারীরিক কাঠামো বিকৃতি করে ছবি টাঙানোর অভিযোগ ওঠে। গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষে সাংসদ লতিফের পক্ষে নগরের আগ্রাবাদ ও বিমানবন্দর সড়কে স্থাপিত অসংখ্য ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃত করা ছিল। এ কারণে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ কারণে আজ বিকেলে তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ মিনার চত্বরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন। এতে বক্তৃতা করেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মনসুর, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ, সহসভাপতি রনি মির্জা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য পংকজ রায় প্রমুখ।

সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মনসুর বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৬ কোটি বাঙালির প্রতীক। তাঁর ব্যবহৃত প্রতিটি জিনিসকে বাঙালি জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে ধারণ করে। এই চেতনায় আঘাতকারীদের কোনো ক্ষমা নেই। অথচ দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী লতিফ পাকিস্তানি ভাবধারায় বঙ্গবন্ধুকে পরিচিত করার চেষ্টা করে সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য কঠিন ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের নগর কমিটির সদস্য পংকজ রায় বলেন, ‘পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থা একাত্তরে বাংলার মাটিতে কবর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি কিছু প্রেতাত্মা রয়ে গেছে। সাংসদ লতিফ তাঁদেরই অন্যতম। তিনি আওয়ামী লীগের অনুপ্রবেশকারী সাংসদ। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। এই অপরাধের জন্য তিনি পার পাবেন না। তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার জন্য আমি সিনিয়র নেতাদের কাছে দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তাঁর সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে অবিলম্বে চট্টগ্রাম-১১ আসনে উপনির্বাচন দিতে প্রধানমন্ত্রী কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বক্তা সাংসদ লতিফকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার আগে লতিফ জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ওই সময় চারদলীয় জোটের মনোনয়ন পেতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। এখনো তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি সরফুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ পরিপূরক শব্দ। জাতির জনকের আহ্বানে এ দেশের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। অথচ দলের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা জামায়াতের অনুসারী এম এ লতিফ আজ আমাদের সংগঠনের এমপি। তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পোশাক পরিধান করেন। সেই পোশাকে বঙ্গবন্ধুকে উপস্থাপন করেছেন তিনি। নিজেদের বিবেক থেকে প্রতিবাদ জানাতে আজ আমরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছি। লতিফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

এ ব্যাপারে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে হলেও আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সাংসদ এম এ লতিফের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে গত মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছাননি।
অারও পড়ুন :-
বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করার অভিযোগ সাংসদের বিরুদ্ধে