Thank you for trying Sticky AMP!!

লাকিংমের জন্য ন্যায় বিচারের দাবিতে ও লাকিংমের স্মৃতির প্রতি ভালোবাসার ‘প্রদীপ প্রজ্জ্বালন’ করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন। শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে

লাকিংমের জন্য ভালোবাসার প্রদীপ

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার কিশোরী লাকিংমে চাকমার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভালোবাসার প্রদীপ জ্বালিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামসহ কয়েকটি সংগঠন। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মোমবাতি জ্বালানো হয়। লাকিংমে হত্যা, নাকি প্ররোচনামূলক আত্মহত্যার শিকার হয়েছে, তা তদন্তে করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে সংগঠনগুলো।

কর্মসূচির আয়োজক অন্য সংগঠনগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, বাংলাদেশ লিগ্যালএইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।
অভিযোগ আছে, টেকনাফ থেকে গত বছরের ৫ জানুয়ারি অপহৃত হয় ১৪ বছর বয়সী লাকিংমে। ওই সময় টেকনাফ থানা পরিবারের অপহরণ মামলা নেয়নি। ২১ জানুয়ারি কুমিল্লার আদালতে লাকিংমেকে ধর্মান্তরিত করে একটি কাজি অফিসে বিয়েতে বাধ্য করা হয়। পরে লাকিংমের পরিবার ২৭ জানুয়ারি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অপহরণের মামলা করে। অপহরণের ১১ মাস পর গত বছরের ডিসেম্বরে মৃত অবস্থায় লাকিংমের সন্ধান পায় পরিবারটি।

লাকিংমের জন্য ন্যায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। আজ সংসদ ভবনের সামনে

লাকিংমের স্বামী দাবিদার আতাউল্লাহর পরিবার বলেছে, ৯ ডিসেম্বর আতাউল্লাহর সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জের ধরে লাকিংমে বিষপানে আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর ১২ দিন আগে সে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়।

আইনি জটিলতা শেষে মৃত্যুর ২৫ দিন পর লাকিংমের মা–বাবা মরদেহ সমাহিত করার জন্য পান।

রাজধানীতে লাকিংমের জন্য প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, লাকিংমের প্রতি পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অপরাধ—অপহরণ, ধর্মান্তরে বাধ্য করা, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে করা, ধর্ষণ এবং হত্যা বা আত্মহত্যায় প্ররোচনার ঘটনা ঘটেছে। কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, লাকিংমের প্রতি একই সঙ্গে বহু ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। রাষ্ট্র কত ফাঁপা, তার নিষ্ঠুর প্রমাণ লাকিংমে।

লাকিংমের জন্য ন্যায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। আজ সংসদ ভবনের সামনে

সভাপ্রধান হিসেবে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং রাষ্ট্রকে মানবিক ও সংবেদনশীল হওয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন, এ দেশের প্রান্তিক মানুষ রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে অনেক দূরে। তাদের কান্না রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছায় না।

কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মহিউদ্দিন খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রীনা রায়, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেইনথিন প্রমীলা, এএলআরডির আইনজীবী রফিক আহমেদ সিরাজী। সংগঠনগুলোর পক্ষে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের তথ্য তুলে ধরেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারহা তানজীম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপপরিচালক শাহানাজ সুমী।