Thank you for trying Sticky AMP!!

লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় দুজনের স্বীকারোক্তি

মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল বারী তাঁদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তবে জবানবন্দির বিস্তারিত জানা যায়নি।

এই দুই আসামি হলেন উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর গ্রামের হেলাল মিয়া (৪৫) ও পৌর শহরের তাতারকান্দি এলাকার খবির উদ্দিন (৪২)। তবে পৌর শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকার শহীদ মিয়া (৬১) স্বীকারোক্তি দেওয়ার বাইরে রয়েছেন।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কিশোরগঞ্জ জেলা ইউনিট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সিআইডি কিশোরগঞ্জ ইউনিটের উপপরিদর্শক কামরুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তার দুজন রাজি হওয়ায় স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। অপরজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তবে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়নি।

র‌্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের সিনিয়র এডি চন্দন কুমার দেবনাথ বলেন, লিবিয়ায় ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে তিনজনেরই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। এর মধ্যে নিহত মোহাম্মদ আলী, মাহবুব মিয়া ও আহত জানু মিয়া পরিস্থিতির শিকার হন হেলালের মাধ্যমে। খবির উদ্দিন ও শহিদ মিয়া একই সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করেন।

লিবিয়ায় গুলিতে নিহত ২৬ বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় গত বুধবার ভৈরব থেকে তিনজনকে আটক করে র‌্যাব। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় ভৈরবে দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলাটি সিআইডির অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

লিবিয়ায় হতাহতের ঘটনায় মামলাটি হয় ৩১ মে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করেন মোবারক হোসেন। তিনি লিবিয়ায় নিহত সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই। সাদ্দাম ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মেহের আলীর ছেলে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মানব পাচারকারী তানজিরুল ওরফে তানজিমকে। তানজিরুল উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে লিবিয়ায় রয়েছেন। সিআইডি প্রথমে আটক করে তানজিরুলের বড় ভাই বাচ্চু মিয়াকে। বাচ্চু মামলার ২ নম্বর আসামি। লিবিয়ায় নিহতের তালিকায় বাচ্চুর ছেলে সাকিবও রয়েছেন। বাচ্চুকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনে মঙ্গলবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি।

র‌্যাবের ভাষ্যমতে, স্বীকারোক্তি দেওয়া দুজনসহ গ্রেপ্তার তিনজনই বড় মাপের মানব পাচারকারী। তাদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তাদের মাধ্যমে বিদেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন অনেকে। আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

র‌্যাব জানায়, খবির পেশায় আছেন ১৫ বছর ধরে। এরই মধ্যে প্রায় ৩০০ লোককে লিবিয়ায় পাঠান তিনি। শহীদেরও পাঠানোর সংখ্যা ৩০০–এর বেশি। তবে হেলাল পেশায় আসেন খবির ও শহীদের কিছুটা পরে, ২০১০ সালে। তাঁর পাঠানো লোকের সংখ্যা ৬০ জনের মতো হবে। তাঁদের পাঠানো লোকের মধ্যে বেশির ভাগই ভৈরবের।

নিহত ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে ভৈরবের রয়েছে ছয়জন। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ আলী (২৫), মাহবুবুর রহমান (২১), রাজন চন্দ্র দাস (২৭), সাকিব মিয়া (১৮), সাদ্দাম হোসেন আকাশ (২৫) ও মো. শাকিল (২০)। আহত হয়েছেন তিনজন। তাঁরা হলেন সৌরভ আহমেদ (২২), সজল মিয়া (২০) ও জানু মিয়া (২৭)।