Thank you for trying Sticky AMP!!

লোভে পরাজিত কার্বন নিঃসরণ কমানোর চেষ্টা

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জলবায়ু পরিবর্তন বিরোধী পদযাত্রায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বক্তব্য দিচ্ছেন। ছবি: হাসান রাজা

বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণ কমানোর চেষ্টা চলছে। অনেক উ​ন্নত দেশ প্রতিশ্রুতি​ও দিচ্ছে। কিন্তু এই চেষ্টা, প্রতিশ্রুতি বা শুভবুদ্ধিকে লোভ বারবার পরাজিত করছে।

আজ শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জলবায়ু পরিবর্তন বিরোধী পদযাত্রায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এ কথা বলেন।
‘নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক জলবায়ু পদযাত্রা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যারিস সম্মেলন (কপ-২১) শুরুর আগে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিবেকবান মানুষকে বিবেকহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কার্বন নিঃসরণের যে চেষ্টা চলছে তাতে প্রতিরোধ আছে। সেখানে লোভ বারবার শুভ বুদ্ধিকে পরাজিত করে চলছে। এটি ক্রমাগত ভাবে বেড়েই চলছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। আর এই প্রতিবাদ কেবল একদিনের নয়, প্রতিদিনের। তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের বাঁচার জন্য সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। এটা করতে পারলে বাংলাদেশ হয়তো রক্ষা পেতে পারে। এই কাজে তিনি সবাইকে সমবেত, সংবদ্ধ ও এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বাপার সহসভাপতি রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, প্রকৃতিকে নির্যাতন করলে প্রকৃতিও এর প্রতিশোধ নেবে। তরুণদের প্রতি তিনি বলেন, দুর্বার তারুণ্যকে পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। উন্নত রাষ্ট্রের প্রতি তিনি বলেন, উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে উন্নত রাষ্ট্র পরিবেশ দূষণ রোধে ভূমিকা রাখবে। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের প্রত্যাশা যে কাজটি আমরা করতে পারিনি তোমরা সেটি করবে, পরিবেশ দূষণ করবে না।
পদযাত্রা শুরুর আগে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ও বাপার সহসভাপতি সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রস্তুত হয়ে অংশ নিতে হবে। ২০৫০ সাল পর্যন্ত সকল দেশের কার্বন নির্গমন ব্যাপক হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে সোচ্চার হতে হবে যাতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড়ের মুখে বিশাল রক্ষাবর্ম। অথচ প্রকৃতি ও বন বিনাশী বৃহদাকার কয়লাভিত্তিক রামপাল ও ওরিয়ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে। জলবায়ু সহায়তায় লক্ষ কোটি টাকা বিদেশি অর্থ পেয়েও বাংলাদেশ বাঁচবে না যদি তার সার্বিক পরিবেশ সংরক্ষণ নিশ্চিত না হয়।
ঘোষণাপত্র পাঠ করার পর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে পদযাত্রা বের হয়। পরে দোয়েল চত্বর থেকে মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন হয়ে পদযাত্রাটি শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাপার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, গণ জলবায়ু পদযাত্রা বাংলাদেশের সমন্বয়ক ও বাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, স্থপতি ইকবাল হাবীবসহ আরও অনেকে। পদযাত্রায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তরুণদের বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেয়। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন উদীচী।

ছবি: হাসান রাজা

পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ফুল, প্রজাপতি, ফড়িংয়ের প্রতিকৃতি।

ছবি: হাসান রাজা

জলবায়ু পরিবর্তন বিরোধী পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা।

ছবি: হাসান রাজা

পদযাত্রায় ছিল মাছ, হরিণ, বাঘের প্রতিকৃতি।

ছবি: হাসান রাজা

শহীদ মিনারে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।