Thank you for trying Sticky AMP!!

শকুনি লেকে ছিপ দিয়ে মাছ শিকারের প্রতিযোগীরা

মাদারীপুরে শকুনি লেকে ছিপ দিয়ে মাছ শিকারের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়; যা চলবে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। মাছ ধরার এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রতিযোগীরা লেকের পানিতে এক রাত দুই দিন মাছ ধরতে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেন। এ জন্য শকুনি লেকে মাছ শিকারের জন্য ৩৫টি মাচা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এতে অংশ নিয়েছেন ৪০ জন প্রতিযোগী। প্রত্যেক প্রতিযোগী এক টিকিটে ছয়টি ছিপ ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন। দীর্ঘ এক কিলোমিটারজুড়ে লেকে ৩৪ ঘণ্টার এই প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শৌখিন মৎস্য শিকারিরা মাছ শিকার করছেন। ছিপ দিয়ে মাছ শিকারের আনন্দ-উদ্দীপনা ছড়িয়ে দিতেই জেলা প্রশাসনের এই আয়োজন।

মাদারীপুরে শকুনি লেকে শুক্রবার সকাল থেকে ছিপ দিয়ে মাছ শিকারের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। চলবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। ছবি: অজয় কুন্ডু

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ ধরা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিযোগীরা। কেউ কেউ এই প্রতিযোগিতায় তাঁদের সহযোগীদের নিয়ে এসেছেন। কেউ বা আবার দল বেঁধে মাছ শিকারে নেমেছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ বড় মাছ পেয়ে খুব খুশি, আবার কেউ আশানুরূপ মাছ না পেয়ে হতাশ। মাছ ধরার প্রতিযোগিতা দেখতে লেকপাড়ে সমবেত হয়েছে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষ। উৎসমুখর পরিবেশে ছিপ দিয়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, শোল, গজারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করছেন তাঁরা।

ঢাকা থেকে মৎস্য শিকারে এসেছেন মোহাম্মদ সৈয়দ, শাহবুদ্দিন, সামসুজ্জামান, আওয়াল, মালেক ও মাইনুদ্দিন। তাঁরা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন প্রতিযোগিতার কথা জানলেই মাছ শিকারে অংশ নেন। ভালোই লাগে ছিপ দিয়ে মনোরম পরিবেশে মাছ ধরতে। শকুনি লেকের পরিবেশ খুবই সুন্দর। তাই এখানে মাছ শিকারের আনন্দটা অন্যরকম।

ফরিদপুর থেকে আসা কলেজছাত্র এস এম মঈন বলেন, ‘আমি লেখাপড়া করি। ছিপ দিয়ে মাছ ধরতে ভালো লাগে। পড়ালেখার পাশাপাশি মাছ ধরা আমার নেশা। প্রতিযোগিতার কথা শুনে প্রথমবারের মতো এখানে এসেছি। এক টিকিটে ছয়টি ছিপ, তাই কয়েকজন বন্ধু মিলে একসঙ্গে মাছ ধরছি।’

মাদারীপুরে শকুনি লেকে ছিপ দিয়ে মাছ ধরছেন শৌখিন মৎস্য শিকারিরা। ১৮ মে ২০১৮। ছবি: অজয় কুন্ডু

বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন সাইদুজ্জামান। শরীয়তপুর থেকে এসে মাছ শিকার করছেন তিনি। বললেন, রুই, কাতলা, মৃগেল, শোলসহ বেশ কয়েক প্রজাতির মাছ পেয়েছেন তিনি।

ছুটির দিনের বিকেলে মাছ ধরা দেখতে আসা দর্শনার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে ছুটির দিনে লেকের পাড়ে ঘুরতে এসে এ দৃশ্য দেখে আরও বেশি ভালো লাগছে। প্রতিবছর বিশেষ দিনে প্রশাসন এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে দর্শনার্থীরা আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।

চরমুগরিয়া এলাকা থেকে আসা কলেজছাত্রী আসমা আক্তার বলেন, ‘লেকটা দেখতে অসম্ভব সুন্দর। এর সঙ্গে লেকের পানিতে শৌখিন মাছ শিকারিরা ছিপ দিয়ে মাছ ধরছেন। এতে লেকের অপরূপ সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে।’

ছিপ দিয়ে মৎস্য শিকার প্রতিযোগিতা ২০১৮ এর সদস্যসচিব মো. শহীদুল ইসলাম মুনশি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শকুনি লেকে প্রায় পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিযোগীরা মাছ শিকারে অংশ নেন।’

জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শকুনি লেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়া হয়। আর এসব মাছ রক্ষণাবেক্ষণসহ প্রতিযোগী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে ভালো লাগার একটি দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতেই আমরা এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। সবচেয়ে বড় মাছ শিকারি প্রতিযোগী তিনজনকে সনদপত্রসহ পুরস্কার দেওয়া হবে।’