Thank you for trying Sticky AMP!!

শল্যবিদের অভাবে বন্ধ অস্ত্রোপচার, ওয়ার্ড তালাবদ্ধ

হাসপাতাল ১০০ শয্যার। কিন্তু ৬০টির বেশি শয্যা চালু নেই। পরিত্যক্ত কয়েকটি ওয়ার্ড তালাবদ্ধ। প্রতিটির দরজাই প্রায় ভাঙা।
দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে জরাজীর্ণ ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।
লালবাগে অবস্থিত এ হাসপাতালে গত মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে বসার চেয়ারগুলো অধিকাংশই ভাঙা, বাকিগুলো নড়বড়ে। সুমাইয়া আক্তার নামের এক গৃহিণী তাঁর তিন বছরের ছেলের চিকিৎসা নিতে এসেছেন। ছেলে ছোটাছুটি করছে। সুমাইয়া বলেন, ‘এই ভাঙাচোরা চেয়ারের লাইগা যহন-তহন পোলাপানের হাত-পা কাটব।’
হাসপাতালের শৌচাগারগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন এই হাসপাতাল ১৯৯০ সালে চালু হওয়ার পর থেকে সংস্কারের মুখ দেখেনি। লোকবলের সংকটের কারণে চালু হচ্ছে না শল্যচিকিৎসার ইউনিট। শল্যবিদ নেই। একজন নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি বদলি হয়ে গেছেন ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে।
হাসপাতালের পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে অনেক সমস্যা চিহ্নিত করে সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, ‘দুর্বল অবকাঠামোর কারণে মানুষের কাছে আমাদের লজ্জা পেতে হয়।’ মোশারফ হোসেন আরও বলেন, শল্যবিদের পদ খালি থাকার কথা হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো শল্যবিদ পাওয়া যায়নি। অবেদন বিশেষজ্ঞও নেই। দুজন চিকিৎসক প্রেষণে অন্য হাসপাতালে আছেন।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বিছানাগুলো অনেক ছোট। এখানে শিশুদের পরিচর্যাকারী স্বজনেরা বলেন, বাচ্চারা একা থাকতে পারে না। সঙ্গে কাউকে সারাক্ষণই থাকতে হয়। কিন্তু বিছানাগুলো ছোট হওয়ায় তাঁদের থাকতে কষ্ট হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিশুর মা বলেন, ‘ডাক্তারের চিকিৎসা ছাড়া সবই বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। ওষুধ সব কিনছি, পরীক্ষাও করছি বাইরে থেকে।’ তিনি আরও বলেন, লালবাগ প্যাথলজি থেকে লোক এসে রোগীদের ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যান। আবার রিপোর্টও তাঁরাই দিয়ে যান।
অভিযোগের ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘অফিশিয়ালি আমার কিছু জানা নেই। রোগীরাও এসব ক্ষেত্রে সুযোগ দিয়ে থাকে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ অর্থবছরে আমরা বাজেট দেব, সব ঠিক হয়ে যাবে।’
ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ শিশু চিকিৎসাসেবা পায়। অন্তর্বিভাগে গড়ে ৫০ জনের মতো শিশু ভর্তি থাকে।