Thank you for trying Sticky AMP!!

শাবিপ্রবিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ

স্বেচ্ছাসেবক দল ও শিক্ষকেরা। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। বাংলাদেশেও খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে এ মহামারি। আর বরাবরের মতোই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকটে পড়েছে দেশের মানুষ। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সাধারণ মানুষদের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে ‘এফইটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’।

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন এফইটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

এ সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাস প্রতিরোধী বস্তু হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাজার থেকেই উধাও। অবস্থাসম্পন্ন মানুষজন যেকোনোভাবে সংগ্রহ করেছেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কিন্তু রিকশাওয়ালা, সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক, প্রান্তিক জনগণ এবং রাস্তার পাশের দোকানদারেরা এ ভাইরাসের সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হতে পারেন। গাড়িচালকেরা যেমন কোনো ধরনের স্বাস্থ্যজ্ঞান ও নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়াই বিভিন্ন জায়গায় যাত্রী পরিবহন করেন, তেমনি এসব মানুষের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হয় বেশি। আর এ কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমও হতে পারেন তাঁরা। অথচ যাঁদের মাধ্যমে এ ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়াতে পারে সেই প্রান্তিক ও খেটে খাওয়া মানুষের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার যেমন বিলাসদ্রব্য তেমনি দুষ্প্রাপ্যও হয়ে পড়েছে। আর তাই এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সাধারণ মানুষদের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের উদ্যোগ নেয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন এফইটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন এফইটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সচিব এবং বর্তমান শিক্ষক হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই সমন্বয়কের দায়িত্ব পড়ে আমার কাঁধে। প্রথমেই প্রয়োজন ছিল অর্থ সংগ্রহ। যোগাযোগ করি বিভাগের কয়েকজন বড় ভাই, ছোট ভাই ও বন্ধুদের সঙ্গে। সবার সাড়া দেখে মনে হলো সবাই যেন প্রস্তুতই ছিলেন। এরপর দরকার স্বেচ্ছাসেবকের। বিভাগের ফেসবুক গ্রুপে অনুরোধ করলে খুব সহজেই সাড়া মেলে।

চলছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ। ছবি: সংগৃহীত

গতকাল রোববার (২২ মার্চ) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের গবেষণাগারে মাত্র কয়েক ঘণ্টার পরিশ্রমেই তৈরি হয়ে যায় ১০০ মিলির ৪০০ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারী, নিরাপত্তারক্ষী ও অটোরিকশাচালকদের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় গেটের আশপাশের দোকানদারদের মধ্যে বিতরণ শেষে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে দাঁড়িয়ে চলমান সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়।

এ সময় বিভাগীয় শিক্ষকদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ইফতেখার আহমদ, অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক জি এম রবিউল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক মো. ইয়াছিন। এ ছাড়া বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শুধু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও এর আশপাশের মানুষদের নিরাপদ রাখার ক্ষুদ্র প্রয়াসের অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগে যাঁরা অর্থ ও শ্রম দিয়ে পাশে থেকেছেন, তাঁদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগ, শাবিপ্রবি, সিলেট