Thank you for trying Sticky AMP!!

আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা উপলক্ষে আয়োজিত অনলাইন সুধী সংযোগে অংশ নেওয়া বিশিষ্টজনেরা।

‘শিক্ষকতা চাকরি নয়, ব্রত’

শিক্ষকতা মহান পেশা। এটিকে চাকরি ধরে নিলে চলবে না। এর মধ্যে জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি মানবসেবার সুযোগ রয়েছে। তাই এটি একটি ব্রত।

রোববার ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা’ উপলক্ষে আয়োজিত চট্টগ্রাম অঞ্চলের ‘অনলাইন সুধী সংযোগ’–এ বক্তারা এসব কথা বলেন। করোনা পরিস্থিতিতে এবার ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সুধী সংযোগ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পপতি-পেশাজীবীরা।

বিদ্যালয়ের ঘণ্টা বাজার মাধ্যমে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয় আয়োজন। এরপর প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরীর পরিচালনায় চলতে থাকে অনুষ্ঠান। শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান বলেন, দেশের অনন্য শিক্ষকদের খুঁজে বের করে সম্মানিত করার আয়োজন হচ্ছে ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা’।

আইপিডিসি ফিন্যান্স লিমিটেডের হেড অব লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স সামিউল হাশিম নিজের শিক্ষকের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘মহান পেশার সঙ্গে যুক্ত আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগরদের সম্মাননা জানানোর এ উদ্যোগে প্রথম আলোকে সঙ্গে পেয়ে আমরা গর্বিত।’

এরপর একে একে জীবনের লক্ষ্য কিংবা গতিপথ পাল্টে দেওয়া শিক্ষকদের স্মরণ করেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিরা। প্রিয় শিক্ষকদের অবদানের কথা বলতে গিয়ে কারও চোখে ছিল পানি, কেউ হয়ে পড়েন স্মৃতিকাতর। আয়োজনে সমাজের নানা অসংগতি ও শিক্ষা খাতে বর্তমান সংকটের কথাও তুলে ধরেন অনেকে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে কবি ও প্রাবন্ধিক আবুল মোমেন বলেন, সত্তর-আশির দশকে শিক্ষককে ছাত্ররা যেভাবে পেয়েছে, সেটি কমে যাচ্ছে। বাস্তবতা হলেও সত্য, এটি এখন শ্রেণিকক্ষের বাইরে গিয়ে কোচিং সেন্টারের দিকে ধাবিত হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের চেয়ে নোট বইয়ের দিকে ঝুঁকেছে। সংকট তৈরি হয়েছে শিক্ষায়। দুর্নীতির কারণে শিক্ষা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মর্যাদাবান ও মেধাবীরা এই পেশায় আসতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

যোগ্য শিক্ষক তৈরি করতে হলে শিক্ষকের মর্যাদা বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষাবিদ আনোয়ারা আলম।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষার অর্থ আলো। যেটি বিতরণ করেন শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা দেশপ্রেম, ভালোবাসা, মমত্ববোধ ও মানবিক মূল্যবোধ জাগান শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

আয়োজনে নিজেদের শিক্ষক নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন চট্টগ্রামের কর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আদনান মান্নান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জয় বিশ্বাস ও বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জয়শ্রী দাশ।

২০১৯ সালের প্রিয় শিক্ষক সম্মাননাপ্রাপ্ত শিক্ষক সফিক উল্ল্যা ও লুৎফুন্নিছা খানম শোনান তাঁদের অনুভূতির কথা। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আখতার কবির চৌধুরী, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার ও আইপিডিসি ফিন্যান্স লিমিটেডের চট্টগ্রাম শাখার ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপক দীপান্বিতা বড়ুয়া। আয়োজনে কথামালার ফাঁকে ফাঁকে ছিল বিভিন্ন তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী।

অনলাইনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আহমেদ রাজীব চৌধুরী, অনুপ কুমার বিশ্বাস, হিল্লোল সাহা, মেহেরুন্নেছা বেগম, সুরিনা তারজিদ, সাদিকা সুলতানা, মিনহাজ হোসাইন, চিটাগাং ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবাকা শমসের, আল্লাই ওখাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা রোখছার, পূর্ব নাসিরাবাদ এ জলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রীনা শওকত, চিকিৎসক হুমায়রা তরফদার, আইনজীবী তাহমিনা সানজিদা শহীদ, আইনজীবী হারিছ উদ্দীন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেন প্রথম আলো চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সদস্যরা।

নির্ধারিত নিয়মে মনোনয়ন শেষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের ৫ জন করে ১০ জন শিক্ষককে দেওয়া হবে এই সম্মাননা। অনলাইনে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করা যাবে (www.priyoshikkhok.com) এই ওয়েব ঠিকানায়।