Thank you for trying Sticky AMP!!

শিক্ষকের অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য

নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজে শিক্ষকের অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের প্রদর্শকের পদগুলোও শূন্য দীর্ঘদিন ধরে। এতে দ্বীপের একমাত্র সরকারি কলেজটিতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
গতকাল শনিবার কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বর্ণা রানি মজুমদার বলে, শিক্ষক-সংকটের কারণে প্রতিদিন গড়ে দু-তিনটির বেশি ক্লাস হয় না। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর প্রায় এক বছর কেটে যাচ্ছে, কিন্তু শিক্ষক না থাকায় এখনো আইসিটি বিষয়ের কোনো ক্লাসই করা হয়নি।
স্বর্ণা আরও বলে, ১৫-১৬ কিলোমিটার দূর থেকে কলেজে আসার পর ঠিকমতো ক্লাস না হলে পরদিন আর আসতে ইচ্ছা হয় না।
একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী তামান্না ইসলাম বলে, শিক্ষক-সংকটের কারণে কলেজে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। এতে তারা পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়ছে। জেলা শহর হাতিয়া থেকে অনেক দূরে। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে জেলা শহরের ভালো কলেজে গিয়ে পড়ালেখা করতে পারে না। বাধ্য হয়ে দ্বীপের এই সরকারি কলেজেই ভর্তি হতে হয়।
কলেজ সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পদ ছাড়া কলেজে শিক্ষকের ৪৬টি ও কর্মকর্তার ৬টি পদ আছে। এর মধ্যে ২৬টি শিক্ষকের ও কর্মকর্তার ৬টি পদ শূন্য। রসায়ন ও পরিসংখ্যান বিষয়ের কোনো শিক্ষকই নেই। এ ছাড়া বাংলার ৪টির মধ্যে ৩টি, ইংরেজির ৪টির মধ্যে ২টি, হিসাববিজ্ঞানের ৪টির মধ্যে ৩টি, ব্যবস্থাপনার ৪টির মধ্যে ৩টি, অর্থনীতির ৪টির মধ্যে ১টি, ইসলামের ইতিহাসের ৪টির মধ্যে ৩টি, ইতিহাসের ৪টির মধ্যে ৩টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ৪টির মধ্যে ৩টি, দর্শনের ২টির মধ্যে ১টি, পদার্থবিজ্ঞানের ২টির মধ্যে ১টি, প্রাণিবিদ্যার ২টির মধ্যে ১টি পদ শূন্য।
সূত্র জানায়, শিক্ষকের পদ ছাড়া পদার্থ, রসায়ন, উদ্ভিদ ও প্রাণিবিদ্যার প্রদর্শক, গ্রন্থাগারিক ও শরীরচর্চার শিক্ষকের পদও সাত-আট বছর ধরে শূন্য। এ ছাড়া প্রধান সহকারী, হিসাবরক্ষক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, ক্যাশিয়ার, হিসাব সহকারীসহ কর্মচারীর ২২টি পদের মধ্যে ১৫টিই শূন্য।
কলেজের সহযোগী অধ্যাপক তবির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকদের আবাসনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দূরের শিক্ষকেরা এখানে যোগদানের কিছুদিন পরই বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এতে কলেজটিতে শিক্ষকের সংকট লেগেই থাকে। এতে করে যাঁরা কর্মরত, তাঁদের ওপর চাপ পড়ে বেশি।
কলেজ সূত্র জানায়, কলেজে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০।
অধ্যক্ষ দেবব্রত দাস গুপ্ত বলেন, প্রতি মাসেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে শূন্য পদের তালিকা পাঠানো হয়। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও নানা চেষ্টা-তদবির করা হয়। কিন্তু কোনো কাজই হচ্ছে না। যতই দিন যাচ্ছে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট আরও বাড়ছে। এ অবস্থায় কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।