Thank you for trying Sticky AMP!!

শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা

রংপুরে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গতকাল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
>
  • রংপুরের কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবি।
  • ক্লাস বর্জন শিক্ষকদের।
  • কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলন করছেন কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রংপুরের কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো ক্লাস বর্জন করে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষকেরা। ফলে কলেজের ১৮টি বিভাগের ১টিতেও কোনো ক্লাস হয়নি। কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলন করছেন কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ মিয়ার অপসারণ দাবিতে গত শনিবার থেকে শিক্ষক পরিষদ এ কর্মসূচির ডাক দেয়। অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল রোববার সকালে কলেজে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক পরিষদের ব্যানারে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন শিক্ষকেরা। বুকে কালো ব্যাজ পরে তাঁরা কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কলেজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ ক্যাম্পাসে আসেননি। বিভাগগুলোতে ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম। এরপরও যাঁরা কলেজে এসেছেন, তাঁরা জটলা করে বিভিন্ন স্থানে গল্পে মেতেছেন। কলেজ কম্পাসের প্রবেশপথে কথা হলো কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মাইদুল ইসলাম বলেন, এমনিতেই ক্লাস খুব কম হয়। তার ওপর আন্দোলন। একসময় একসঙ্গে পড়ার চাপ সামলানো কষ্টকর হয়ে উঠবে।

অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এরপর প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কলেজ শাখার সভাপতি হোজায়ফা সাফওয়ান, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি এহতেশাম, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি আরিফ আলী, ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি অর্মিতা নন্দ, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম প্রমুখ।

শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, অধ্যক্ষ শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে নিজের মতো কাজ করেন। জানতে চাইলে সবার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। অধ্যক্ষের আচরণ ভালো হলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী একসঙ্গে এভাবে আন্দোলনে নামতেন না। কলেজের উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাক বলেন, এখন কলেজে খুব বেশি ক্লাস পরীক্ষা নেই। ক্লাস পরেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু এভাবে কলেজ চলতে পারে না।

অধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কলেজে নানামুখী কাজ করতে চাই। ভালো কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে শিক্ষক পরিষদ আমার বিরুদ্ধে কোনো কারণ ছাড়াই উঠেপড়ে লেগেছে।’ তিনি আরও বলেন, শিক্ষকেরা সরকারি কর্মকর্তা। তাঁরা এভাবে ক্লাস বন্ধ করে আন্দোলন করতে পারেন না। এতে কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বিঘ্ন হচ্ছে।

এদিকে অধ্যক্ষ গত বৃহস্পতিবার রাতে উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরীসহ নয়জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।