Thank you for trying Sticky AMP!!

শিশুদের পড়াশোনার জন্য চাপ দেবেন না: রাষ্ট্রপতি

বক্তব্য দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ছবি: বাসস

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিশুদের পড়াশোনা অথবা অন্য কোনো বিষয়ে চাপ না দিতে এবং তাদের প্রতিভা বিকাশের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০১৯’ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিশুদের অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেবেন না। অসুস্থ প্রতিযোগিতা তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করে।’

রাষ্ট্রপ্রধান শুধুমাত্র জিপিএ-৫ এর পেছনে না ছুটে শিশুদের জন্য প্রকৃতি থেকে শিক্ষা লাভের এবং প্রয়োজনীয় মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে বেড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টির জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।

শিশুদের সকল ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার জন্য অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তাহলেই শিশুরা দেশ ও জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠবে।’
ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই শিশুদের মাঝে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ঘটানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘তোমাদের (শিশু) অবশ্যই দেশকে ভালোবাসতে শিখতে হবে। কখনো অন্যায় ও অসত্যের সঙ্গে আপস করবে না।’

আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘যদি তুমি সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চল, তবে জীবনে সফল হতে পারবে।’
রাষ্ট্রপতি হামিদ ২০২১ সালে দেশের স্বাধীনতার ৫০ বর্ষপূর্তি ও ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কথা উল্লেখ করে শিশুদের কাছে দেশের স্বাধীনতা ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে উৎসাহিত করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা শিশুদের অনেক ভালোবাসতেন। তিনি তাদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন।’
বঙ্গবন্ধুর শৈশবের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিশুকাল থেকেই জাতির পিতা দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতেন ও তাদের সাহায্য করতেন। এমনকি তিনি একজন গরিব লোককে তাঁর পরনের শার্ট খুলে দিয়েছিলেন এবং শার্ট ছাড়াই বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তোমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তিনি অত্যন্ত সাহায্যকারী এবং অসামান্য নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন মানুষ ছিলেন।’
রাষ্ট্রপতি শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে জ্যেষ্ঠ নাগরিক, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সকলের আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘পাঠ্যসূচির মাধ্যমে শিশুদের মাঝে সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করুন, যাতে করে তারা কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে মুক্ত থাকতে পারে।’
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, আজকের শিশু আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। তারা দেশপ্রেম, বাংলা ভাষা, মুক্তি চিন্তা ও মানবিক নৈতিক মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে।
এর আগে রাষ্ট্রপতি ২৩৭ জন বিজয়ীর ৩০ জনের মাঝে পুরস্কার ও পদক বিতরণ করেন।

১৯ জানুয়ারি থেকে মোট ৩ লাখ ২৭ হাজার ১২৭ জন প্রতিযোগী ছবি আঁকা, নৃত্য, আবৃতি, অভিনয় ও গানসহ ৩০টি বিষয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, বিশিষ্ট সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পরিচালক আনজির লিটন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং বিজয়ীদের সঙ্গে ছবি তোলেন।