Thank you for trying Sticky AMP!!

সমাজ উন্নয়নে স্বেচ্ছাশ্রম দেন তাঁরা

স্বেচ্ছাসেবা সম্মাননার আঞ্চলিক মতবিনিময় সভায় হাতে হাত মিলিয়ে দেশের জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সংগঠকেরা। গতকাল বিকেলে সিলেট চেম্বারে। ছবি: প্রথম আলো

কেউবা নদীর তীর ঘুরে ঘুরে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেন। কেউ আবার এতিম শিশুদের আবাসন আর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। এমন সংগঠনও রয়েছে, যার সদস্যরা শহরে আগুন লাগলেই বালতি আর উপকরণ নিয়ে নেভাতে ছুটে যান। কোনো সংগঠনের সদস্যরা বই পড়ান, কেউ কেউ কাজ করছেন শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবেশ, সংস্কৃতি আর সমাজ নিয়ে। মূলত সবাই সমাজের উন্নয়নে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।

এসব স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে নগরের জেল রোড এলাকায় সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলনকক্ষে বসেছিল মিলনমেলা। ভলান্টিয়ার সার্ভিসেস ওভারসিজ (ভিএসও) এবং প্রথম আলোর যৌথ আয়োজনে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ‘স্বেচ্ছাসেবা সম্মাননা ২০২০’ উপলক্ষে আঞ্চলিক মতবিনিময় সভার অংশ হিসেবে এ মিলনমেলা হয়েছে।

প্রথম আলোর সিলেট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় ও বন্ধুসভার সহযোগিতায় আয়োজিত মতবিনিময়ে সিলেটের ৪১টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাব্রতীদের কাজের স্বীকৃতি এবং তাঁদের অনুপ্রেরণার গল্প ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। ব্যক্তি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুটি ক্যাটাগরি থেকে আটটি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবক বা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে। গতকালের অনুষ্ঠানে এরই মনোনয়ন নেওয়া হয়।

বিকেল সাড়ে চারটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। উদ্দীপনামূলক বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, সিলেট বিবেকের প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম, ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়কারী আশরাফুল কবীর ও বইপড়ুয়াদের সংগঠন ইনোভেটরের নির্বাহী সঞ্চালক প্রণবকান্তি দেব।

শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ। সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোমিত আল রশীদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি তামান্না ইসলাম। উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবক প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য দেন বুস্টার্সের রাজীব কুমার রায়, ক্লিন সুরমার মনজুর আহমেদ আরিফ, ইচ্ছাপূরণের প্রতিষ্ঠাতা রেশমা জান্নাতুল রুমা, সূর্যোদয় যুবসংঘের সোনিয়া আক্তার, সেবা ফাউন্ডেশনের নাদিম মাহমুদ ও স্বপ্নপূরণ সেবা সংস্থার শেখ হাবিব রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর তথ্যচিত্র ‘নায়ক ও অধিনায়কেরা’ ও ‘প্রথম আলোর ২০ বছর’ এবং ভিএসওর একটি তথ্যচিত্রের পাশাপাশি গানের ভিডিও ‘সেদিন আর কত দূরে’ প্রদর্শন করা হয়। সভায় জানানো হয়, ১০ মার্চ পর্যন্ত মনোনয়ন দেওয়া যাবে। অনলাইনে নির্দিষ্ট ফরমে মনোনয়ন দেওয়া যাবে। পাশাপাশি প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গিয়ে পিডিএফ ফরমটি ডাউনলোড করে ফরমের নির্দিষ্ট তথ্য লিখে ডাকযোগে প্রথম আলোর ঠিকানায়ও পাঠানো যাবে।

মতবিনিময় সভায় তরুণেরা তাঁদের জীবনের নানা কাজের অভিজ্ঞতার গল্প শোনান। এ সময় তাঁরা জানান, ভিএসও ও প্রথম আলোর এমন উদ্যোগ তরুণদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে আরও অনুপ্রাণিত করবে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। তরুণদের মতো সবার মধ্যে এ বোধ জাগ্রত হলে এই দেশ একদিন সত্যিকারের সোনার দেশে পরিণত হবে।

আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, স্বেচ্ছাসেবীদের সংখ্যা যতই বাড়বে, ততই দেশ আলোকিত হবে। এখানে কেউ কারও প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সবাই সবার বন্ধু হিসেবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ‘আমি’ শব্দকে ‘আমরা’ শব্দে পরিণত করতে পারলেই জীবন আনন্দময় হবে। আর স্বেচ্ছাসেবীরা মূলত সেই আনন্দময় জীবনের জন্যই কাজ করছেন। তাঁরা মনুষ্যত্ববোধ জাগাতেও কাজ করছেন।