Thank you for trying Sticky AMP!!

সমাজ বদলাবে স্বেচ্ছাসেবক

খুলনার স্বেচ্ছাসেবক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সম্মাননাবিষয়ক মতবিনিময় সভা করে খুলনা প্রথম আলো। এ সভায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক তাঁদের মতামত প্রকাশ করেন। গতকাল খুলনা প্রেসক্লাবে। ছবি: প্রথম আলো

যাঁরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেন, তাঁরা একপ্রকার ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান’। অনেকেই তাঁদের ‘পাগল’ বলেন। তবে ওই পাগলরাই সমাজ পরিবর্তনে কাজ করেন। বিপদগ্রস্ত–অসহায় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। স্বেচ্ছাসেবকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ওই প্রচেষ্টাই একসময় দেশকে বদলে দেবে, সমাজকে বদলে দেবে, আলোকিত করবে বাংলাদেশকে। 

খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে গতকাল রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবা সম্মাননা মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। বিভিন্ন এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেন এমন বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ওই সভায় অংশ নেন। 

ওই সভায় যাঁরা উপস্থিত ছিলেন বয়সে তাঁরা সবাই তরুণ এবং শিক্ষার্থী। তাঁদের কেউ পথশিশুদের শিক্ষার জন্য কাজ করেন, কেউ নারী অধিকার আদায়ে, কেউ পরিবেশদূষণ রোধে আবার কেউবা বিনা মূল্যে দুস্থ রোগীদের রক্তদান সেবায় এগিয়ে যান। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করাই তাঁদের প্রধান ব্রত। যান্ত্রিক জীবনে সবাই যখন প্রতিযোগিতার দৌড়ে ব্যস্ত, তখন একদল তরুণ নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন মানুষের জন্য। অনুষ্ঠানে অনেকেই নিজেদের কাজগুলো তুলে ধরেন। 

তরুণদের এমন স্বেচ্ছাসেবাকে উৎসাহ দিতে শুরু হচ্ছে ‘স্বেচ্ছাসেবা সম্মাননা ২০২০’। ভালো কাজের স্বীকৃতি দেওয়ার ওই উদ্যোগ নিয়েছে ভলান্টারি সার্ভিসেস ওভারসিজ (ভিএসও) এবং প্রথম আলো। গতকাল ওই উদ্যোগের অংশ হিসেবে খুলনায় ভিএসও-প্রথম আলো স্বেচ্ছাসেবা সম্মাননাবিষয়ক মতবিনিময় সভা হয়। 

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সভাপতি আনোয়ারুল কাদির, খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) খুলনা বিভাগীয় সম্পাদক কুদরত-ই-খুদা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাজিদুল ইসলাম, প্রথম আলো স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স কো-অর্ডিনেটর ফিরোজ চৌধুরী প্রমুখ। 

বন্ধুসভায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মোছাব্বের হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো খুলনার নিজস্ব প্রতিবেদক শেখ আল-এহসান। ফিরোজ চৌধুরী বলেন, যাঁরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেন, তাঁদের কিছুটা সম্মানিত করতেই ওই স্বেচ্ছাসেবা সম্মাননার আয়োজন করা হয়। তবে ৩৫ বছরের ওপরে কেউ ওই সম্মাননার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায়ে আবেদন করা যাবে। 

আনোয়ারুল কাদির বলেন, ‘অনেকেই আছেন, যাঁরা একসঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করেন; কিন্তু সেটি না করে যদি দুই বা একটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া যায়, তাহলে সেটি ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়। একজন সন্ত্রাসী যখন হেঁটে যান, তখন সালামের বহর ওঠে, তাঁর পিতাও সালাম পান। আর যিনি স্বেচ্ছাসেবা করেন, তাঁকে সবাই পাগল বলেন। এই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখেই এগিয়ে যেতে হবে।’

কুদরত-ই-খুদা বলেন, সমাজ পরিবর্তনে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সম্মাননার মাধ্যমে প্রথম আলো ওই স্বেচ্ছাসেবকদের আরও উৎসাহিত করবে।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর ভিডিও চিত্র নায়ক ও অধিনায়কেরা, আলোর পাঠশালা, ভিএসও ভিডিও, প্রথম আলোর ২০ বছর, গানের ভিডিও ‘সেদিন আর কত দূর’ প্রদর্শন করা হয়।