Thank you for trying Sticky AMP!!

সর্বনাশা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প রুখতে হবে

‘সুন্দরবন রক্ষায় যেকোনো মূল্যে সর্বনাশা রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প রুখতে হবে’—এই স্লোগান সামনে রেখে সুন্দরবন অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই লংমার্চে বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মী অংশ নিচ্ছেন। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আগামী শনিবার তাঁদের বাগেরহাটে পৌঁছার কথা। গতকাল বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, আসাদগেট-গাবতলী হয়ে সাভারের রানা প্লাজার সামনে গিয়ে প্রথম সমাবেশ করেন লংমার্চকারীরা।
সমাবেশে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘মুনাফার নির্মম বলির প্রতীক হচ্ছে এই রানা প্লাজা। আমাদের সুন্দরবনকেও মুনাফাখোরেরা তাদের লোভের কবলে ফেলে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। সেখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে পৃথিবীর বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বনটি ধ্বংস হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, রামপাল প্রকল্পে লাভ হবে ভারত আর দেশি দখলদার ও কমিশনভোগীদের। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষতি চরম মাত্রায় ও সর্বব্যাপী।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘একটি ভবন ভেঙে গেলে আবার নির্মাণ করা যায়। কিন্তু যে মানুষগুলো ওই ভবনে চাপা পড়ে মারা যায়, তারা আর ফিরে আসে না। তেমনি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে গিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস হলে তাকে আর ফিরে পাব না। তাই যেকোনো মূল্যে এই সর্বনাশা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন রুখে দিতে হবে।’
এই সমাবেশ শেষে লংমার্চটি বেলা পৌনে তিনটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাত্রাবিরতি করে। সেখানে লংমার্চকে স্বাগত জানাতে প্রতিবাদী সংগীতসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ সুন্দরবন রক্ষার এই লংমার্চে অংশ নিতে ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভারতের সঙ্গে করা চুক্তি প্রতিহত করা হবে বলেও ঘোষণা দেন।
এরপর বিকেল সোয়া পাঁচটায় লংমার্চটি মানিকগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। সেখানে পৌঁছে একটি পথসভা করা হয়। রাতে মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে অবস্থান করেন লংমার্চকারীরা। আজ বুধবার সকালে লংমার্চটি আবার আরিচা হয়ে রাজবাড়ী ও ফরিদপুর যাবে। ফরিদপুরে রাতে অবস্থান করবে।
লংমার্চে অন্যদের উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।