Thank you for trying Sticky AMP!!

সাংবাদিক গৌতম হত্যার দায়ে নয়জনের যাবজ্জীবন

গৌতম দাস

সাংবাদিক গৌতম দাসকে হত্যার দায়ে নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন আসিফ ইমরান, আসিফ ইমতিয়াজ, কাজী মুরাদ, কামরুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান, আসাদ বিন কাদির, রাজীব হাসান, তামজিদ হোসেন ও আবু তাহের মোহাম্মদ মুর্তজা। তাঁদের মধ্যে প্রথম আটজন কারাগারে আটক রয়েছেন। আবু তাহের মোহাম্মদ মুর্তজা পলাতক আছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ফরিদপুর শহরের মুজিব সড়কের সংস্কার এবং পুনর্নির্মাণকাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ পরিবেশন করায় ‘সমকাল’-এর নিজস্ব প্রতিবেদক ও ফরিদপুর ব্যুরো কার্যালয়ের প্রধান গৌতম দাসের ওপর ক্ষুব্ধ হয় তত্কালীন ক্ষমতাসীন সরকারের মদদপুষ্ট ঠিকাদার গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসী চক্র।
এ ঘটনার জের ধরে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর স্থানীয় ব্যুরো কার্যালয়ে গৌতমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ওই দিনই ‘সমকাল’-এর জেলা প্রতিনিধি হাসান উজ্জামান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৬ সালের ২০ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার তত্কালীন উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম নবী আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ওই বছরের ১৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে মামলাটি ২০০৬ সালের ২৮ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ স্থানান্তর করা হয়। মামলার আসামি জাহিদ খান পলাতক অবস্থায় ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকায় হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

এদিকে অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ থেকে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে আদালত মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করার আদেশ দেন। এরপর আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বারবার মামলার কার্যক্রম পেছাতে থাকে। পাঁচ বছর পর ২০১২ সালে হাইকোর্ট আসামিদের আবেদন নাকচ করে নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে আদেশ দেন। এরপর আবার শুরু হয় মামলার বিচারকাজ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ২৭ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করা হয়।

চলতি বছরের ১৯ জুন মামলার যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষ হয় এবং আদালত রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

রায়ের পর গৌতম দাসের স্ত্রী দীপালি দাস প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমি এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। এ রায় দিয়ে আমি কী করব? এরা তো দুই দিন পরই বের হয়ে যাবে। আবার স্ত্রীরা বিধবা হবে। মা তাঁর সন্তান হারাবেন। আমি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাই। দেশে এত সাংবাদিক নিহত হলো, কোনো সাংবাদিক হত্যারই সুষ্ঠু বিচার হলো না। তাই এ বিচারের বিষয়ে আমাদের আগ্রহ ছিল বেশি। তাই যে রায় হলো, এ রায়ের পর দেশে সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন কমবে না, বরং বেড়ে যাবে।’

মামলার বাদী ও ‘সমকাল’-এর ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি হাসান উজ্জামান বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলাম। রায়ে আদালত পারিপার্শ্বিক প্রমাণে তাঁরা (আসামি) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত—এমন মন্তব্য করেছেন। এর পরও এ রায় আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’