Thank you for trying Sticky AMP!!

সাংসদের 'ইচ্ছায়' চিত্রার পাড় দখল করে রাস্তা

যশোরের খাজুরা এলাকায় চিত্রা নদীর পাড় দখল করে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। গত শুক্রবার দুপুরে। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

যশোর-৪ আসনের (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) সাংসদ রণজিৎ কুমার রায়ের ‘ইচ্ছায়’ বাঘারপাড়ার খাজুরা বাজারে চিত্রা নদীর পাড় দখল করে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য একটি সড়ক নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

ওই সড়কের ২০০ ফুট দূরত্বে বাজারের মূল সড়ক রয়েছে। যে কারণে ‘দৃষ্টিনন্দন’ সড়কটি নির্মাণের অপরিহার্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি আপত্তি জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। নদী ভরাট করে এভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হলে নদীর নাব্য কমে যাবে উল্লেখ করে সড়কটির নির্মাণকাজ বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে এলজিইডিকে চিঠি দিয়েছে পাউবো।

এলজিইডির বাঘারপাড়া কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের (সিআরডিপি) আওতায় বাঘারপাড়া উপজেলার খাজুরা বাজারের ব্রিজঘাট থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত ৮ ফুট চওড়া ও ৬৭০ মিটার দীর্ঘ একটি সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। যশোরের মঈনুদ্দিন বাশি নামের একজন ঠিকাদারকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যশোরের খাজুরা এলাকায় চিত্রা নদীর পাড় দখল করে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। গত শুক্রবার দুপুরে। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

খাজুরা বাজারের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ওই সড়কের সঙ্গে সাংসদ রণজিৎ কুমার রায়ের দুটি জায়গা রয়েছে। সড়কটি নির্মিত হলে জায়গা দুটির মূল্য বহুগুণ বেড়ে যাবে।

এই সড়ক নির্মাণের কাজ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য গত ২৩ এপ্রিল পাউবোর যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী এলজিইডির যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলমের কাছে চিঠি পাঠান। প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে নদীর তলদেশের মাটি কেটে পাড় দখল করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজ বন্ধ রাখার জন্য চিঠি দিয়েছি। কিন্তু তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি পাউবোকেও অবহিত করা হয়নি।’

এদিকে বাঘারপাড়া উপজেলার শালিখা থেকে যশোর সদর উপজেলার লেবুখালী পর্যন্ত চিত্রা নদীর ৪০ কিলোমিটার খননের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পের সঙ্গে রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পটি সাংঘর্ষিক বলে জানান প্রবীর কুমার গোস্বামী।

যশোরের খাজুরা এলাকায় চিত্রা নদীর পাড় দখল করে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। গত শুক্রবার দুপুরে। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

এলজিইডির বাঘারপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, এমপি (রণজিৎ কুমার রায়) সাহেবের ইচ্ছায় চিত্রা নদীর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

আপনার ‘ইচ্ছায়’ নদীর তীর দখল করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে সাংসদ রণজিৎ কুমার রায় বলেন, ‘আমি তো চাই আমার এলাকার উন্নয়ন হোক। খাজুরা বাজারে অনেক বড় হাট বসে। হাটের দিনে বাজারে পা ফেলার জায়গা থাকে না। প্রচণ্ড ভিড় হয়। এ জন্য বাজারসংলগ্ন নদীর ধারে হাঁটার জন্য একটি রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি বিনোদনের জন্যই করা হচ্ছে। মানুষ চলাচলও করতে পারবে। নদী ভরাট করে রাস্তা করা হচ্ছে—এ অভিযোগ ঠিক না। তা ছাড়া নদীর পাড় ফাঁকা পড়ে থাকলে দখল হয়। ওই রাস্তাটি করা হলে নদীর জায়গা আর দখল হবে না।’

এলজিইডির যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম বলেন, খাজুরা বাজার কমিটির আগ্রহে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য একটি রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে সরেজমিন পরিদর্শন করার জন্য বলা হয়েছে।