Thank you for trying Sticky AMP!!

সাগরে ভাসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বলেছে জাতিসংঘের ৩ সংস্থা

মিয়ানমারের উচিত বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের দ্রুত ফিরিয়ে নেওয়া। প্রথম আলো ফাইল ছবি

জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা বঙ্গোপসাগর আর আন্দামান সাগরে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ট্রলারে ভাসতে থাকা শ পাঁচেক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ আহ্বান জানিয়েছিল। 

আজ বুধবার ব্যাংকক থেকে প্রচারিত এক যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তর (ইউএনওডিসি) এ আহ্বান জানিয়েছে।


প্রসঙ্গত, রাখাইন থেকে মানব পাচারকারীদের ফাঁদে পড়ে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা মালয়েশিয়া যাত্রা করেছিল। দেশটির উপকূলে ভিড়তে না পেরে পাচারকারীরা তাদের নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। যদিও ৩ মে ২৮ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উপকূলে আসার পর তাদের পাঠানো হয়েছে ভাসানচরে। সাগরে ভাসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২ মে এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়।


জাতিসংঘের তিন সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পাঁচ বছর আগে ২০১৫ সালে বঙ্গোপসাগর আর আন্দামান সাগরে হাজার হাজার শরণার্থী ও অভিবাসীর জীবন বাঁচানোর জন্য সুরক্ষা না দেওয়ায় “ট্রলারবোঝাই মানুষের সংকটের” শুরু হয়। এ ধরনের বিয়োগান্ত ঘটনা আবার ঘটতে যাচ্ছে বলে আমরা আভাস পাচ্ছি। জরুরি ভিত্তিতে খাবার, পানীয় ও চিকিৎসা সহায়তার অভাবে থাকা ঝুঁকিতে থাকা, নারী, পুরুষ আর শিশুরা একই এলাকায় ভাসমান থাকার খবরে আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।’


ইউএনএইচসিআর, আইওএম এবং ইউএনওডিসি আজ তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, করোনাভাইরাসের মহামারির কালে এসব রোহিঙ্গার সাগরে ভাসা খুবই উদ্বেগজনক।


তবে ২০১৬ সালের বালি ঘোষণা অনুযায়ী, এ অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বালি ঘোষণার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে তিন সংস্থা। একই সঙ্গে সংস্থাগুলো এসব রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।


শরণার্থীদের সুরক্ষা, মানব পাচারসহ অভ্যন্তরীণ অভিবাসন এবং অভিবাসন ব্যবস্থায় একে অন্যকে সহযোগিতার লক্ষ্যে জাতিসংঘের ৪৯টি সদস্য দেশ বালি প্রক্রিয়া নামের মোর্চা গঠন করে। বালি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ইত্যাদি দেশ অন্যতম সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছে।


জাতিসংঘের তিন সংস্থা বলেছে, ‘আমরা এ অঞ্চলের দেশগুলোকে রোহিঙ্গাদের খুঁজে বের করে আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানাই। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার প্রক্রিয়া যাতে মানবিক ও নিরাপদ থাকে। কিছু অঞ্চলে এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কোয়ারেন্টিনের এমন ব্যবস্থা আছে যাতে লোকজন নিরাপদে, সুশৃঙ্খলভাবে এবং মর্যাদার সঙ্গে একটি উপকূলে পৌঁছাতে পারে। উদ্ধারের কাজ সমন্বিতভাবে হতে হবে, যাতে উদ্ধারের পর এদের নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া যায়।’


জাতিসংঘের তিনটি সংস্থার মতে, সমন্বিতভাবে এ সমস্যার সমাধান না হলে মানবিক এই বিপর্যয় বারবার ঘটতেই থাকবে। তাই ইউএনএইচসিআর, আইওএম এবং ইউএনওডিসি মানবিক এই সংকটের বৃত্ত ভাঙতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।